গ্লাসগোর মাটিতে ক্রিকেট ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় দিন পার করল নেদারল্যান্ডস ও নেপাল। একটি ম্যাচে তিন-তিনবার সুপার ওভারে যাওয়ার নজির এটাই প্রথম—পুরুষদের পেশাদার ক্রিকেটে (T20 বা List A) এর আগে এমন নাটকীয়তা কখনও দেখা যায়নি। শেষ পর্যন্ত এই রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে নেপালকে হারিয়ে ইতিহাস গড়েছে নেদারল্যান্ডস।
নেদারল্যান্ডসের ব্যাটিংয়ের শুরুটা ছিল আক্রমণাত্মক। মাইকেল লেভিট ও ম্যাক্স ও’ডাউড প্রথমদিকে বাউন্ডারি মেরে স্কোরবোর্ড সচল রাখেন। কিন্তু স্পিন আক্রমণে খোলসে ঢুকে যায় ডাচ ব্যাটিং।
সন্দীপ লামিচানে তার দ্বিতীয় বলেই লেভিটের স্টাম্প উড়িয়ে দেন। এরপর তিনি তুলে নেন অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস ও নোয়া ক্রোয়েসকে। তবে নিডামানুরু (৩৫) ও সাকিব জুলফিকার শেষদিকে দ্রুত কিছু রান তোলায় দল পৌঁছে যায় ১৫২ রানে।
জবাবে নেপালও শুরুতেই ব্যাকফুটে চলে যায়। মাত্র ৯ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে দল। তবে কুশল ভূর্তেল ও রোহিত পৌডেল পরিস্থিতি সামাল দেন এবং পাওয়ারপ্লেতে স্কোর নিয়ে যান ৫২/২-এ। কিন্তু এরপর আবারও শুরু হয় পতনের মিছিল। ড্যানিয়েল ডোরাম বল হাতে জ্বলে ওঠেন। তিনি ৪ ওভারে মাত্র ১৪ রানে তুলে নেন ৩ উইকেট। ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন তিনিই।
শেষ ৫ ওভারে নেপালের দরকার ছিল ৫৬ রান। সেখানে রূপেশ সিং ও পৌডেল কিছুটা আশা দেখালেও শেষ ওভারে আসল দৃশ্যপট তৈরি করেন নন্দন যাদব।
তার টানা চার ও ছক্কার মারেই সমতায় পৌঁছায় ম্যাচ — শুরু হয় প্রথম সুপার ওভার।
সুপার ওভার ১: পাল্টাপাল্টি ছক্কা-চার, তবু সমতা
ডোরামকে নেপাল প্রথম সুপার ওভারে মারল ১৯ রান। বিপরীতে, নেদারল্যান্ডসও কোনো কমতি রাখেনি — ও’ডাউডের শেষ বলের ছক্কা ও চার ম্যাচ নিয়ে যায় দ্বিতীয় সুপার ওভারে।
সুপার ওভার ২: বোলারদের বুদ্ধি আর ব্যাটারদের সাহস
দ্বিতীয় সুপার ওভারে লালিত রাজবংশী প্রথম তিন বলে ২ ছক্কা খেলেও পরে নিয়ন্ত্রণ ফেরান। নেদারল্যান্ডস থামে ১৭ রানে। রোহিত পৌডেল প্রথম বলেই ছক্কা মারেন, দীপেন্দ্র আইরি চার মারেন, তারপর শেষ বলে দরকার ৭ — আবারও ছক্কা! খেলা যায় তৃতীয় সুপার ওভারে।
সুপার ওভার ৩: বোলিং শৈলীতে বাজিমাত
তৃতীয় ওভারে জ্যাক লায়ন-ক্যাশে ইতিহাস গড়েন। প্রথম দুই বলে তুলে নেন পৌডেল ও রূপেশ সিংকে, রানের খাতা খুলতেই পারেনি নেপাল। জবাবে প্রথম বলেই মাইকেল লেভিট লামিচানেকে মারেন ছক্কা — নেদারল্যান্ডস জিতে নেয় ইতিহাসের সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচ।
