ঢাকার জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চতুর্থ দিনের মতো চিকিৎসাসেবা বন্ধ রয়েছে। গত বুধবার (২৮ মে) থেকে চিকিৎসক ও কর্মচারীরা কর্মবিরতি পালন করছেন, যা আজ শনিবার (৩১ মে) পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। এই অবস্থায় প্রতিদিন শত শত রোগী চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন, ফলে রোগীদের মধ্যে চরম হতাশা ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
ঘটনার পেছনের কারণ
সম্প্রতি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের সঙ্গে চিকিৎসক ও কর্মচারীদের মধ্যে মারামারি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর পরিপ্রেক্ষিতে চিকিৎসক ও কর্মচারীরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করে কর্মবিরতি শুরু করেন। হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. জানে আলম জানিয়েছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে, তবে নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসক ও কর্মীরা কাজে ফিরতে অনিচ্ছুক।
রোগীদের দুর্ভোগ
চিকিৎসাসেবা বন্ধ থাকায় প্রতিদিন গড়ে ১,২০০ থেকে ১,৫০০ জন রোগী বহির্বিভাগে চিকিৎসা নেন। সেবা বন্ধ থাকার কারণে তাদের ফিরে যেতে হচ্ছে খালি হাতে। আজ শনিবারও হাসপাতালটিতে কোনো চিকিৎসাসেবা চালু করা যায়নি। রোগী ও তাদের স্বজনরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। অনেকে আজ সকাল থেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও চিকিৎসা না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন।
আজিমপুর থেকে আসা আজিজ মিয়া বলেন, “সরকারি হাসপাতালে চারদিন সেবা বন্ধ, সরকার থেকে কেনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। সাধারণ জনগণ চিকিৎসাসেবা নিবে কোথা থেকে।” বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে অর্থসংকটে পড়তে হচ্ছে অনেককে।
প্রশাসনের উদ্যোগ
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়ে উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে, তবে এখনও কোনো আশ্বাস পাওয়া যায়নি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করছে দ্রুত চিকিৎসাসেবা চালু করার, তবে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি যেন আবার না ঘটে, সে বিষয়েও সজাগ থাকতে হচ্ছে।
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. জানে আলম বলেন, ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসক ও কর্মীরা কাজে ফিরতে অনিচ্ছুক।’
চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয় উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তবে এখনও কোনো আশ্বাস পাওয়া যায়নি। তিনি আরও বলেন, ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করছে দ্রুত চিকিৎসাসেবা চালু করার, তবে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি যেন আবার না ঘটে, সে বিষয়েও সজাগ থাকতে হচ্ছে।
গেল বুধবার নিরাপত্তার দাবিতে হাসপাতালটির চিকিৎসক নার্স কর্মকর্তা কর্মচারীদের কর্মবিরতি কর্মসূচিতে হামলা করে জুলাই গণআন্দোলনের আহত যোদ্ধারা। এতে চিকিৎসকসহ ১৫ জন স্টাফ আহত হন। আতঙ্কে হাসপাতাল ছাড়েন চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এরপর থেকে হাসপাতালটির দখল নিয়ে আছেন জুলাই যোদ্ধারা।