দীর্ঘ সাত দিন বন্ধ থাকার পর অবশেষে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের জরুরি বিভাগ আজ বুধবার (০৪ জুন) সকাল থেকে পুনরায় চালু হয়েছে। তবে, হাসপাতালটির অপারেশন থিয়েটার এবং অন্যান্য পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম এখনই শুরু হচ্ছে না। এই আকস্মিক বন্ধের কারণে দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছিলেন।
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. জানে আলম গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, “বুধবার সকাল থেকে জরুরি বিভাগ খোলা হয়েছে। যারা চিকিৎসার জন্য আসছেন, তারা চিকিৎসা পাচ্ছেন। তবে রোগীর তেমন চাপ নেই। বহির্বিভাগেও চিকিৎসা কার্যক্রম এখনও বন্ধ রয়েছে।”
হাসপাতাল খোলা হলেও সব চিকিৎসক ও কর্মচারী এখনও কাজে যোগ দেননি বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে ডা. জানে আলম বলেন, “জরুরি বিভাগ পরিচালনার জন্য যে জনবল দরকার, সেই জনবল এসেছে। সামনে ঈদের ছুটি, তাই সবাই এখনই যোগদান করেনি, কেউ কেউ ছুটিতে রয়েছেন।”
বর্তমানে হাসপাতালটিতে কোনো নতুন ভর্তি রোগী নেই। কেবল চতুর্থ তলায় গত জুলাই মাসের আন্দোলনে আহত প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ জন রোগী এখনও রয়েছেন। তাদের বিষয়ে একটি বোর্ড গঠন করে বুধবারই সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছেন পরিচালক।
গত ২৮ মে হাসপাতালটির কর্মচারীদের সঙ্গে গত জুলাইয়ে আহত রোগীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার পর নিরাপত্তার অজুহাতে হাসপাতালের সব চিকিৎসক ও কর্মচারী কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকেন, যার ফলে টানা সাত দিন ধরে হাসপাতালটিতে কোনো ধরনের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়নি। এই অচলাবস্থার কারণে দূর-দূরান্ত থেকে আসা শত শত রোগীকে প্রধান ফটক থেকেই ফিরে যেতে হয়েছে এবং ভর্তি রোগীরাও একে একে চলে গেছেন।
গতকাল মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের এক বিশেষ বৈঠকের পর আজ হাসপাতালটির জরুরি বিভাগ খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
জুলাইয়ে আহত রোগী আবির আহমেদ শরীফ বলেন, “আমরা উন্নত চিকিৎসার জন্যই লড়াই করে যাচ্ছি। আমরা চাইছি হাসপাতাল খোলা থাকুক। সাধারণ মানুষ চিকিৎসা পাক, আমরাও চিকিৎসা পাই।” জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগ চালু হওয়ায় রোগীদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও, পূর্ণাঙ্গ সেবা চালু না হওয়ায় চিকিৎসা প্রত্যাশীদের অপেক্ষা আরও দীর্ঘ হতে পারে।