গল টেস্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় দিন শেষে দারুণ এক শক্ত অবস্থানে বাংলাদেশ। মুশফিকুর রহিমের দুর্দান্ত ইনিংস এবং লিটন দাসের অর্ধশতকের ওপর ভর করে ১২২ ওভার শেষে সফরকারীদের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৪০৩ রান। ওভারের শেষ বলে লিটনের বাউন্ডারিতেই ছোঁয়া যায় চারশ। এরপর তুলে নেন নিজের ১৮তম টেস্ট ফিফটি। অপর প্রান্তে মুশফিক অপরাজিত ১৫৪ রানে।
এর আগে টেস্ট ক্যারিয়ারে সপ্তমবারের মতো ১৫০ ছাড়ানো ইনিংস খেলেন অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিকুর রহিম। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এটি তাঁর তৃতীয় ১৫০+ ইনিংস, যা নিজেই একটি উল্লেখযোগ্য রেকর্ড। এছাড়া আরও এক রেকর্ডের খাতায় নাম তুলেছেন মুশফিক। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কখনো একটি বলও করেনি এমন ক্রিকেটারের সংখ্যা ২১১৬ জন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কখনো বল না করা ক্রিকেটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ রান এখন থেকে মুশফিকুর রহিমের। টেস্টে দেড়শ ছাড়ানো ইনিংসে মুশফিকের আশেপাশেও নাই কোনো বাংলাদেশি। মুশফিক যেখানে টেস্টে ১৫০ পার করেছেন সাতবার, সেখানে দুইয়ে মুমিনুল ৩, আশরাফুল-তামিম দুবার পেরিয়েছেন দেড়শ।
শান্ত-মুশফিকের অবিচ্ছিন্নতা, লিটনের আক্রমণাত্মক মেজাজ
প্রথম দিন টপ অর্ডারের ব্যর্থতার পর চাপ সামলে দলকে টেনে তোলেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিক। ৪৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়া দলকে দুর্দান্তভাবে টেনে তোলেন এই দুই ব্যাটার। প্রথম দিন শেষে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৩ উইকেটে ২৯২। শান্ত অপরাজিত ছিলেন ১৩৬ রানে, মুশফিক ১০৫ রানে।
দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই অবশ্য শান্ত থেমে যান ১৪৮ রানে। ২৭৯ বলে ১৫ চার ও ১ ছক্কায় সাজানো তাঁর ইনিংসটি থামে আসিথা ফার্নান্দোর বলে ম্যাথুসের হাতে ক্যাচ দিয়ে। এই উইকেট ভাঙে মুশফিকের সঙ্গে গড়া ২৬৪ রানের দারুণ এক জুটি।
লিটন-মুশফিকের নতুন ভিত্তি
এরপর নতুন জুটি গড়েন লিটন ও মুশফিক। দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনে ২৭ ওভারে ৯১ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। লাঞ্চে যাওয়ার সময় স্কোর দাঁড়ায় ৩৮৩/৪। লাঞ্চের সময় মুশফিক ২৭২ বলে ১৪১ এবং লিটন ৫৭ বলে ৪৩ রানে অপরাজিত ছিলেন। পরে এই জুটিতেই আরও অগ্রসর হয় দল।
লিটনের ইনিংসটা ছিল বেশ ওয়ানডে মেজাজে, যেখানে তিনি পেয়েছেন দুয়েকটি জীবনও। এরপর ৫০ পূর্ণ করে তবেই থামেননি, বরং দ্রুত রান তুলে মুশফিককে সঙ্গ দেন শক্ত ভিত গড়ার কাজে।
বাংলাদেশের হয়ে এটি টেস্ট ইতিহাসে ৩০তম বার ইনিংসে ৪০০ বা তার বেশি রান। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সপ্তমবার। এই ইনিংস আবারও প্রমাণ করল, টপ অর্ডার ব্যর্থ হলেও অভিজ্ঞ মুশফিক-শান্ত-লিটনের মতো ব্যাটাররা দলকে কতটা নির্ভরতা দিতে পারেন।