এক ঐতিহাসিক ও আবেগঘন মুহূর্তে দেশে ফিরলেন মিস ওয়ার্ল্ড ২০২৫ জয়ী অপাল সুচাতা চুয়াংস্রি। শনিবার (১৪ জুন) সকালে তিনি পৌঁছান থাইল্যান্ডের সুয়ারনাভুমি বিমানবন্দরে, যেখানে তাকে স্বাগত জানাতে হাজির হয় হাজার হাজার মানুষ। এ যেন এক বিজয়ীর প্রত্যাবর্তন। এটাই প্রথমবার, থাইল্যান্ডের কোনো নাগরিক মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতায় সেরা হয়েছেন। তাই এই জয়ে দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে গর্ব আর আনন্দের বন্যা।
অপালের সঙ্গে ছিলেন মিস ওয়ার্ল্ড সংগঠনের চেয়ারপারসন জুলিয়া মরলি, যাকে ফুল ও করতালির মাধ্যমে শুভেচ্ছা জানায় থাই জনতা। শুধু তাই নয়, থাই রাজপরিবারের পক্ষ থেকেও অপালকে শুভেচ্ছা জানানো হয়। প্রিন্সেস সিরিওয়ানাভারি নারিরাতানা রাজাকানিয়ার পক্ষ থেকে পাঠানো হয় ফুলের তোড়া।
অপাল বলেন, “এই রাজকীয় শুভেচ্ছা আমার জীবনের এক বড় সম্মান, যা আমি সবসময় হৃদয়ে রাখব।”
বিমানবন্দরে কেউ মুকুট পরে, কেউ অপালের মতো সাজে—নিজেদের মতো করে উদ্যাপন করেছে সবাই। কেউ হাসছিল, কেউ কাঁদছিল—কিন্তু সবার চোখেই ছিল অভিমান নয়, গর্ব আর ভালোবাসা।
এরপর রাজধানী ব্যাংককের বিখ্যাত সুকুমভিত সড়কে বের হয় রাজকীয় শোভাযাত্রা—‘হোমকামিং ৭২তম মিস ওয়ার্ল্ড’। সানরুফ খোলা গাড়িতে বসে অপাল থাই পতাকা উড়িয়ে জনতার অভিবাদন গ্রহণ করেন।
শোভাযাত্রায় ছিল হাতির প্রতিকৃতি, মুকুট, এবং একটি বিশেষ সিংহাসন। দু’পাশে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলেন দুই লাখেরও বেশি মানুষ, হাতে পোস্টার, মুখে হাসি।
থাইল্যান্ডের বড় রিটেইল গ্রুপ দ্য মল অপালকে দিয়েছে ১০ লাখ বাহতের শপিং ভাউচার (যার মূল্য প্রায় ৩০ হাজার মার্কিন ডলার)। আর থাই পোস্ট ঘোষণা দিয়েছে অপালের ছবিসহ বিশেষ ডাকটিকিট প্রকাশের।
‘দ্য মল’-এ আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশ নেয় তিন হাজারের বেশি ভক্ত। শিশুদের একটি দল মঞ্চে উঠে গেয়ে শোনায় মিস ওয়ার্ল্ড সংগঠনের থিম গান—“Light the Passion, Share the Dream”। উপস্থিত অনেকেই চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি।
অপাল বলেন, “এই মুকুট শুধু আমার নয়, এটা আমাদের সবার। আপনি যেই হোন না কেন, কেউ না কেউ আপনাকে অনুসরণ করে। তাই নেতৃত্ব মানে হচ্ছে মর্যাদা, কাজ, আর অন্যকে পথ দেখানো।”
মিস ওয়ার্ল্ড সংগঠনের চেয়ারপারসন জুলিয়া মরলি বলেন, “অপাল শুধু রূপের নয়, উদ্দেশ্যের প্রতীক। তিনি স্তন ক্যানসার বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে কাজ করছেন, আমরা সারা বিশ্বে একসঙ্গে কাজ করব।”