আসন্ন ঈদুল আজহার আগে কোরবানির পশু কেনা ও তার বিধানাবলী নিয়ে মুসলিম সমাজে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে, কোরবানির পশুর ওলানে দুধ থাকলে কী করণীয়, সে বিষয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও আলেম-ওলামাদের পক্ষ থেকে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। কোরআনের নির্দেশনা অনুযায়ী ‘বাহিমাতুল আনআম’ বা গৃহপালিত চতুষ্পদ জন্তু কোরবানি করতে হয়, যার মধ্যে উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা অন্তর্ভুক্ত। এই ছয় ধরনের পশুর নর ও মাদা উভয়ই কোরবানির জন্য জায়েজ।
ওলানে দুধ থাকলে করণীয়: যদি কোরবানির জন্য কেনা গাভী, মাদি ছাগল বা ভেড়ার ওলানে দুধ থাকে, তাহলে কোরবানিদাতা, তার পরিবার বা কোনো সম্পদশালী আত্মীয়-স্বজন সেই দুধ পান করতে পারবে না। যদি জবাইয়ের সময় আসন্ন হয় এবং দুধ দোহন না করলে পশুর কষ্ট হবে না বলে মনে হয়, তাহলে দুধ ওলানেই রেখে দিতে হবে, দোহন করা যাবে না। প্রয়োজনে পশুর ওলানে ঠান্ডা পানি ছিটিয়ে দেওয়া যেতে পারে, যাতে দুধের চাপ কমে।
তবে, যদি দুধ দোহন না করা পশুর জন্য কষ্টকর হয়, তাহলে সেই দুধ দোহন করে দরিদ্রদের সদকা করে দিতে হবে। এক্ষেত্রেও কোরবানিদাতা, তার পরিবার বা আত্মীয়-স্বজন ওই দুধ পান করতে পারবে না। যদি ভুলবশত কেউ পান করে ফেলে, তাহলে সেই দুধের মূল্য গরিবদের সদকা করে দিতে হবে।
কোরবানির পশুর বয়সসীমা: কোরবানির জন্য পশুর নির্দিষ্ট বয়সসীমা পার হওয়া জরুরি। যেকোনো বয়সের পশু দিয়ে কোরবানি করা যায় না।
১. উট: কোরবানির জন্য উটের বয়স কমপক্ষে ৫ বছর হতে হবে।
২. গরু ও মহিষ: এই দুটি পশুর ক্ষেত্রে বয়স কমপক্ষে ২ বছর হতে হবে।
৩. ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা: এই তিনটি পশুর বয়স কমপক্ষে ১ বছর হতে হবে।
বিশেষভাবে উল্লেখ্য, ভেড়া ও দুম্বা যদি ১ বছরের কিছু কমও হয়, কিন্তু এমন হৃষ্টপুষ্ট হয় যে দেখতে ১ বছরের মতো মনে হয়, তাহলে তা দ্বারা কোরবানি করা জায়েজ। এক্ষেত্রে ভেড়া ও দুম্বার বয়স কমপক্ষে ৬ মাস হতে হবে। তবে, ছাগলের বয়স ১ বছরের কম হলে কোনো অবস্থাতেই তা দিয়ে কোরবানি জায়েজ হবে না।
কোরবানির পশুতে শরিক হওয়ার ক্ষেত্রেও ইসলামিক বিধান রয়েছে। যেমন: উট, গরু ও মহিষ: এই তিনটি পশুর কোরবানিতে সর্বোচ্চ সাতজন শরিক হতে পারে। অর্থাৎ, একজন থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ সাতজন ব্যক্তির পক্ষ থেকে একটি পশু কোরবানি যথেষ্ট হতে পারে। এক্ষেত্রে শরিকরা পশু কেনায় সমান অংশীদার হবে এবং গোশতও সমানভাবে ভাগ করে নেবে।
ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা: এই তিনটি পশু একজনের পক্ষ থেকে কোরবানি করা যায়, একাধিক শরিকের ক্ষেত্রে এগুলো জায়েজ নয়।