দীর্ঘদিনের তাপপ্রবাহের পর কিছুটা স্বস্তির খবর দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তারা জানিয়েছে, আগামী সোমবার (১৩ মে) থেকে সারাদেশে বৃষ্টিপাত শুরু হতে পারে, যা ক্রমান্বয়ে তাপমাত্রা হ্রাসে সহায়ক হবে। চলমান তীব্র গরমের পরিপ্রেক্ষিতে এটি দেশের সাধারণ মানুষের জন্য এক আশাব্যঞ্জক খবর।
চলমান তাপপ্রবাহের প্রেক্ষাপট
গত দুই সপ্তাহ ধরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ৩৮ থেকে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা বিরাজ করছে। যশোর, চুয়াডাঙ্গা, রাজশাহী, ঢাকা, কুষ্টিয়া, খুলনা ও গোপালগঞ্জসহ ৮-১০টি জেলায় তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এতে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে এবং হিটস্ট্রোক, পানিশূন্যতা ও অন্যান্য স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে।
কোথায় কোথায় বৃষ্টি হতে পারে?
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ১৩ মে থেকে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চল দিয়ে বৃষ্টিপাত শুরু হয়ে ধীরে ধীরে তা ছড়িয়ে পড়বে দেশের অন্যান্য অঞ্চলে। মৌসুমি লঘুচাপের প্রভাবে এই বৃষ্টিপাত হবে বলে জানা গেছে। ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট, রংপুর ও চট্টগ্রাম বিভাগে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে।
তাপমাত্রা কতটা কমতে পারে?
আবহাওয়াবিদদের মতে, বৃষ্টিপাত শুরু হলে দিনের তাপমাত্রা ৩-৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কমে যেতে পারে। ফলে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬-৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসবে এবং রাতের তাপমাত্রাতেও সামান্য পরিবর্তন হবে।
হালকা কালবৈশাখীর সম্ভাবনা
আবহাওয়া অফিস সূত্রে আরও জানা গেছে, বৃষ্টিপাতের সময় দমকা হাওয়া ও হালকা কালবৈশাখী ঝড় হতে পারে, যা গ্রীষ্মকালের স্বাভাবিক আচরণ। এ সময় নদী পথে চলাচলকারী ও কৃষকদের জন্য সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বিশেষজ্ঞ মত
আবহাওয়াবিদ মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, “১৩ থেকে ১৬ মে পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হবে, যা পরিস্থিতি কিছুটা সহনীয় করবে। তবে মে মাসে নিয়মিত মৌসুমি বৃষ্টিপাত শুরু হতে আরও দেরি আছে।”
স্বাস্থ্য ও কৃষিতে প্রভাব
বৃষ্টিপাতের ফলে তাপদাহজনিত স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন হিটস্ট্রোক, পানিশূন্যতা ও ঘামাচির প্রকোপ কমে আসবে বলে চিকিৎসকরা আশা করছেন। এছাড়া দীর্ঘদিনের খরার পর বৃষ্টি হলে আম, লিচু ও ধানের মতো গ্রীষ্মকালীন ফসলের জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
পরামর্শ
আবহাওয়া অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে বৃষ্টিপাতের সময় বজ্রপাত থেকে সতর্ক থাকতে, খোলা জায়গায় অবস্থান না করার এবং শিশু ও বৃদ্ধদের বিশেষভাবে সুরক্ষিত রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এই বৃষ্টিপাত দীর্ঘদিনের দাবদাহে অতিষ্ঠ মানুষের জন্য কিছুটা হলেও স্বস্তি বয়ে আনবে বলে প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।