গত কয়েকদিনের ঝড়-বৃষ্টিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অপরিপক্ব আম গাছ থেকে ঝরে পড়ায় চাষিরা মাত্র সাড়ে তিন থেকে চার টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে সামান্য আয় হলেও আমচাষিদের মধ্যে দুশ্চিন্তা বিরাজ করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত শুক্রবার (১৬ মে) ও শনিবার রাতের ঝড়-বৃষ্টিতে জেলার পাঁচ উপজেলার মধ্যে গোমস্তাপুরে ক্ষতি সবচেয়ে বেশি। ফজলি, গোপালভোগ, আশ্বিনা, খিরসাপাতি, গুটিসহ বিভিন্ন জাতের অপরিপক্ব আম ঝরে পড়েছে। এসব আম চাষিরা সাড়ে তিন থেকে চার টাকা কেজি দরে আচার তৈরির জন্য বিক্রি করছেন। অনেকে বাগান থেকে কুড়িয়ে এনে পাইকারদের কাছে বিক্রি করছেন।
গোমস্তাপুরের আমচাষি তামিম হোসেন বলেন, “শুক্রবার রাতে হঠাৎ ঝড়-বৃষ্টিতে আমার বাগানের অনেক আম ঝরে নষ্ট হয়েছে। এসব আম কুড়িয়ে সাড়ে তিন থেকে চার টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হয়েছে। কয়েকদিন পর এই আম ১০০-১৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতো।”
পাইকারি ব্যবসায়ী সেলিম রেজা বলেন, “ঝড়ে পড়া অপরিপক্ব আম তেমন কাজে লাগে না। তাই আচার তৈরির জন্য কম দামে কিনতে হয়। আমের পরিমাণ বেশি হওয়ায় বাধ্য হয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে।”
অপর ব্যবসায়ী মাসুদ হাসান জানান, ঝড়ে পড়া আমে দাগ পড়ে নষ্ট হয়ে যায়। অপরিপক্ব আম জুসের পাল্প তৈরিতে ব্যবহার করা যায় না। তাই কম দামে কিনে ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক ড. মো. ইয়াছিন আলী বলেন,
“গত দুই দিনের ঝড়-বৃষ্টিতে জেলার বিভিন্ন এলাকায় আম ও লিচুর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গোমস্তাপুরে ক্ষতির পরিমাণ তুলনামূলক বেশি। অপরিপক্ব আম ঝরে পড়ায় চাষিরা কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।”
কৃষি বিভাগের তথ্যানুসারে, চলতি মৌসুমে জেলায় ৩৭ হাজার ৫০৪ হেক্টর জমির আমবাগান থেকে ৩ লাখ ৮৬ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে ঝড়-বৃষ্টির কারণে এই লক্ষ্য অর্জন নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।