বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে বরগুনার নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের ডালভাঙা এলাকার একটি রিং বেড়িবাঁধ ভেঙে অন্তত ২০০ পরিবার চরম দুর্ভোগে পড়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৯ মে) থেকে শুরু হওয়া জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এসব এলাকার ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
আজ শুক্রবার (৩০ মে) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, বিষখালী নদীর পানি গত বুধবার রাত থেকে আজ দুপুর পর্যন্ত ৩ থেকে ৪ ফুট পর্যন্ত বেড়েছে। এতে ডালভাঙা এলাকার রিং বেড়িবাঁধের কিছু অংশ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকছে। এর ফলে বহু বাড়িঘর পানিবন্দী হয়ে পড়েছে এবং রান্না করার চুলাও নষ্ট হয়ে গেছে।
ডালভাঙা গ্রামের বাসিন্দা আবুল বাসার জানান, “গতকাল দুপুরে জোয়ারের পানি বেড়ে বেড়িবাঁধ ভেঙে গ্রাম তলিয়ে যায়। আমাদের রান্না করার চুলাও নষ্ট হয়ে গেছে। আমরা এখন জোয়ার হলে আর ঘরে থাকতে পারছি না। আশপাশে কোনো আশ্রয়কেন্দ্রও নেই যে সেখানে উঠব। ত্রাণ লাগবে না, আমরা এই বেড়িবাঁধের দ্রুত মেরামত চাই।”
আরেক স্থানীয় বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম পরিবার নিয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। তিনি বলেন, “সমুদ্রের নিম্নচাপ হয়ে নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেই জোয়ারে আমাদের এলাকা তলিয়ে যায়। এটা প্রতিবছরই হয়। এসময় পরিবার নিয়ে আতঙ্কে থাকি। আমাদের যাওয়ার জায়গা নেই তাই পানির মধ্যেই থাকতে হয়।” তিনি আরও জানান, গবাদি পশু রাখারও শুকনো কোনো স্থান না থাকায় সেগুলোকে কোনোমতে বেঁধে রাখা হয়েছে।
মাছেরখাল এলাকার জেলে হালিম বলেন, “জোয়ারে পানি উঠতেছে আবার ভাটার সময় নেমে যাচ্ছে। এখানের রাস্তাও ধসে গেছে। এখন হেঁটে যাওয়ার মতো অবস্থাও নেই। এখানে দ্রুত পানি বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।”
ডালভাঙা ছাড়াও মাঝের চর ও ১০ নম্বর নলটোনা ইউনিয়নের কিছু কিছু এলাকায় বেড়িবাঁধ অতি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে, যা ওইসব এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
এ বিষয়ে বরগুনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, “রিং বেড়িবাঁধ উপচে পানি প্রবেশের কথা শুনেছি। বরগুনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এরই মধ্যে এসব এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এসব এলাকার বাসিন্দাদের জন্য আশ্রয়ণ কেন্দ্র খোলা আছে। আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছি। জোয়ারের পানি কমে গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”