ঈদুল আজহার আগে ঘরমুখো মানুষের ঢল নেমেছে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকায়। পদ্মা সেতু চালুর পর এই নৌরুটে চাপ কমলেও ঈদের ছুটিতে পুরনো রূপে ফিরেছে পাটুরিয়া ঘাট, যেখানে ফেরির জন্য অপেক্ষা করছেন শত শত যাত্রী ও বিভিন্ন ধরনের যানবাহন।
আজ বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কর্মজীবী মানুষ ফেরি ও লঞ্চে করে নদী পারাপার হয়ে নিজ নিজ গন্তব্যে যাচ্ছেন। লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বহন ঠেকাতে নৌপুলিশ, বিআইডব্লিউটিএ এবং ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা নিরলসভাবে কাজ করছেন।
অন্যদিকে, পাটুরিয়ার ৩, ৪ ও ৫ নম্বর ঘাটে ফেরির অপেক্ষায় যাত্রী ও যানবাহনের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। বিশেষ করে ৫ নম্বর ঘাট এলাকায় শতাধিক ছোট গাড়িকে পার হওয়ার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
পদ্মা সেতু চালু হওয়ার আগে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার ঈদযাত্রীরা এই পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথ ব্যবহার করতেন। সেতু চালুর পর এই রুটে চাপ অনেকটাই কমে এলেও ঈদের সময় যাত্রী ও যানবাহনের চাপ কিছুটা বেড়ে যায়, যা এবারও স্পষ্ট।
এদিকে, তীব্র গরম ও রোদের মধ্যে ফেরির জন্য অপেক্ষা করা যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সাভারের একটি সোয়েটার ফ্যাক্টরির কর্মচারী রনি হোসেন জানান, তিনি বরিশালের পথে রওনা হয়েছেন এবং ৫০ মিনিট ধরে ফেরির অপেক্ষায় আছেন। ঘাটে ফেরি আসতে দেরি হওয়ায় তিনি বিরক্ত। একইসাথে কুষ্টিয়ার যাত্রী রফিকও ৩০ মিনিট ধরে ফেরির জন্য অপেক্ষা করছেন।
ট্রাকচালক আলমগীর হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “সকাল ৭টা থেকে এই ঘাট থেকে ওই ঘাট, প্রায় আড়াই ঘণ্টা হলো ফেরিতে উঠতে পারিনি।”
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্পোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) এর সহকারী মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. আব্দুস সালাম জানান, ঈদের চাপ থাকলেও বর্তমানে কোনো বড় ধরনের ভোগান্তি নেই। তিনি বলেন, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে বর্তমানে ৯টি রোঁ রোঁ (বড়), ৩টি মিডিয়াম এবং ৫টি ইউটিলিটি (ছোট) ফেরি চলাচল করছে।
তবে, তিনি আরও জানান যে নদীতে পানি বাড়ার কারণে পাটুরিয়া ও রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া নৌপথে পদ্মা নদীর অববাহিকায় তীব্র স্রোত রয়েছে। এই কারণে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বর্তমানে ফেরি চলাচলে বেশি সময় লাগছে, যা অপেক্ষার সময় বাড়িয়ে দিচ্ছে। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।