দীর্ঘ চার মাস পর দেশে ফিরে গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’য় পৌঁছেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। মঙ্গলবার (৬ মে) দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে তিনি রাজধানীর গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর রোডে নিজ বাসভবন ‘ফিরোজা’য় পৌঁছান।
এর আগে, সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে তাকে বহনকারী কাতারের রাজপরিবারের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বিমানবন্দর থেকে বাসভবন পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে তার গাড়িবহরকে প্রায় ২ ঘণ্টা সময় লাগে।
নেত্রীর স্বাগত জানাতে ঢল, ফিরোজা প্রাঙ্গণে উৎসবমুখর পরিবেশ
এ সময় সড়কের পাশে অবস্থান নেওয়া হাজার হাজার নেতাকর্মী জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানান। বিএনপি নেত্রী গাড়ি থেকে হাত নেড়ে নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছার জবাব দেন। গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’য় পৌঁছালে আগে থেকে অবস্থানরত শত শত দলীয় নেতা-কর্মী তাকে স্বাগত জানান। খালেদা জিয়ার দেশে ফেরা উপলক্ষে তার গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’ আগেই সম্পূর্ণ প্রস্তুত করা হয়।
সঙ্গে ছিলেন দুই পুত্রবধূ
লন্ডনে চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার সময় তার সঙ্গে ছিলেন দুই পুত্রবধূ—তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শামিলা রহমান সিঁথি। খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন থেকে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন।
তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির পাঠানো রাজকীয় বহরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে গত ৭ জানুয়ারি লন্ডনে যান। সেখানে লন্ডন ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। টানা ১৭ দিন ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন থাকার পর তিনি ২৫ জানুয়ারি থেকে ছেলে তারেক রহমানের বাসায় ছিলেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। তারা বলছেন, খালেদা জিয়া দীর্ঘ সময় স্বৈরাচার শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে কারাগারে ছিলেন। ন্যায়বিচার পাননি। তাকে উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল। কারাগার থেকে মুক্তি দিলেও গৃহবন্দী করে রাখা হয়। তাকে নেতাকর্মীদের থেকে দূরে রাখা হয়।
খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করে নেতাকর্মীরা বলছেন, গণতন্ত্রের আপসহীন নেত্রী খালেদা জিয়া আমাদের মাঝে ফিরে এসেছেন। তার নেতৃত্বে আমরা সব বাধা অতিক্রম করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করব। খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার এই ঘটনা বিএনপি ও তার সমর্থকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।