যুবলীগের ‘ধাওয়াপ্রাপ্ত’ নেতা, এখন গেজেটেড ‘যোদ্ধা’!

New-Project-10-7.jpg
২৪ ঘণ্টা বাংলাদেশ

ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালাতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়ায় আহত হয়েছিলেন এক যুবলীগ নেতা। সেই ব্যক্তি এখন হয়েছেন ‘জুলাই যোদ্ধা’—পেয়েছেন সরকারের দেওয়া এক লাখ টাকার সম্মানী চেকও। এতে ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দা, শিক্ষার্থী ও সচেতন নাগরিকরা।

খুলনার তেরখাদা উপজেলার মধুপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিনারুল ইসলাম গত ১৪ মে খুলনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ‘আহত জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে সি ক্যাটাগরিতে এই অনুদান গ্রহণ করেন।

কী ঘটেছিল ৪ আগস্ট?

২০২৩ সালের ৪ আগস্ট, ঢাকা ও খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছাত্র-জনতার ‘অব্যাহত ধরপাকড় ও নির্যাতনের’ প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা রাজপথে নামে। খুলনার আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে ছাত্রদের বিক্ষোভ চলাকালে যুবলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়।

এই সংঘর্ষে আহত হন মিনারুল। তবে তিনি আহত হয়েছিলেন পালাতে গিয়ে কার্যালয়ের টিনের চালে ঝাঁপ দিলে—এমন তথ্য মিলেছে দলীয় নেতাদের মুখেই। অর্থাৎ, তিনি কোনো আন্দোলন বা সরকারবিরোধী দমন-পীড়নের শিকার হননি—বরং ছিলেন সেই দমনকারী বাহিনীর অংশ।

তবু কিভাবে ‘আন্দোলনরত আহত’ সনদ পেলেন?

খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিতান কুমার মণ্ডল জানিয়েছেন, মিনারুল সরাসরি মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন। জেলা বা উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে যাচাই না হওয়ায়, খুলনার কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানতো না। মন্ত্রণালয়ের যাচাই-বাছাই শেষে তার নাম গেজেটভুক্ত হয়। তবে তিনি বলেন, “কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে তা তদন্ত করে গেজেট থেকে নাম বাতিলের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।”

নিজ দলই জানে না ‘আন্দোলন’ করেছেন!

তেরখাদা উপজেলা যুবলীগ সভাপতি এফ এম মফিজুর রহমান স্পষ্ট জানান, মিনারুল গত বছরই দলের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ায় বহিষ্কৃত হন। তিনি বলেন, “৪ আগস্ট খুলনায় দলের কার্যালয়ে মিনারুল ছিল—সে কোনো আন্দোলন করেনি বরং পালিয়ে আহত হয়।” এমনকি সেই সময়ের জেলা যুবলীগ সভাপতি কামরুজ্জামান জামালও বলেন, “সে ধাওয়ার মুখে টিনের চাল থেকে লাফ দিয়ে আহত হয়, পরে হাসপাতালে ভর্তি ছিল। ৫ আগস্টের পর তার সঙ্গে আর যোগাযোগ হয়নি।” মোবাইল ফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও মিনারুল ইসলামের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এক পর্যায়ে তিনি বলেন, “জরুরি মিটিংয়ে আছি, পরে ফোন করি।” এরপর থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন।

Leave a Reply

scroll to top