বহিষ্কারের পরও পরীক্ষায় অংশ নিলেন জাবি ছাত্রলীগ কর্মী, ক্ষুব্ধ সহপাঠীরা

New-Project-1-2.jpg

মো. আদনান সাইফে

২৪ ঘণ্টা বাংলাদেশ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাময়িক বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ কর্মী মো. আদনান সাইফের পরীক্ষা দেওয়া নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক ও অসন্তোষ। গত ৪ মে ‘নিউক্লিয়ার ফিজিকস’ কোর্সের (৩০৬) পরীক্ষায় রিপিটার হিসেবে অংশ নেন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের এই শিক্ষার্থী, যিনি জুলাইয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় সাময়িকভাবে বহিষ্কৃতদের তালিকায় ছিলেন। জানা গেছে, তিনি এর আগে এ কোর্সের মৌখিক পরীক্ষাতেও অংশগ্রহণ করেন।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটি সূত্র জানিয়েছে, চলতি সেমিস্টারে জুলাই মাসে সংঘটিত ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় ২৫৯ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়। পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ থেকে বহিষ্কৃতদের মধ্যে ১৩ জন রয়েছেন, যাদের তালিকায় অষ্টম নম্বরে রয়েছে আদনান সাইফের নাম।

শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

তবে বহিষ্কৃত অবস্থায় পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেক শিক্ষার্থী। তাদের দাবি, হামলায় অভিযুক্ত একজনের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচারের পরিপন্থী। একাধিক শিক্ষার্থী জানান, হামলায় জড়িত একজনকে পরীক্ষাকেন্দ্রে দেখে তারা বিস্মিত ও বিরক্ত।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, “যে ব্যক্তি আমাদের ওপর হামলা করেছিল, এখন তার সঙ্গে একই পরীক্ষায় অংশ নিতে হচ্ছে—এটা অত্যন্ত অপমানজনক। এখনো কিছু ছাত্রলীগ নেতা তাকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে। আমাদের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের উপর চরম আঘাত। আজ ছাত্রলীগ ক্ষমতায় থাকলে হয়তো আমরা ক্যাম্পাসে থাকতে পারতাম না। কিন্তু তারা দাপটের সঙ্গে ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়াচ্ছে পরীক্ষা দিচ্ছে। তারা যে কোন সময় যে কোনো রকমের অপ্রীতিকর ঘটনা ক্যাম্পাসে হঠাৎ হতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি অতি দ্রুত যেন এটার কঠোর ব্যবস্থা নেন।”

যা বলছে প্রশাসন

এ বিষয়ে বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরা বিভ্রান্তির মধ্যে রয়েছেন। জানতে চাইলে বিভাগীয় পরীক্ষা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. ওবায়দুর রহমান বলেন, “আমি তার বহিষ্কারের বিষয়টি জানি না। সাধারণত প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভাগীয় চেয়ারম্যানের কাছে এ ধরনের তথ্য পাঠানো হয়।”

পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সালাউদ্দিন জানান, আদনান সাইফ পরীক্ষা দিয়েছে কি না, তা নিশ্চিত না হলেও, ওইদিন সকালে সে কয়েকজন সহপাঠীসহ তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে। সাইফ দাবি করেছে যে, সে হামলায় যুক্ত ছিল না বরং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়েছিল। তিনি আরও বলেন, “সে কিছু ছবি এবং একটি লিখিত আবেদন জমা দিয়েছে, যা আমি উপাচার্যের দপ্তরে প্রেরণ করেছি।”

Leave a Reply

scroll to top