দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সব শিক্ষা ও পরীক্ষা কার্যক্রম স্থগিত (শাটডাউন) ঘোষণা করেছে শিক্ষক সমিতি। বৃহস্পতিবার (১৬ মে) কাকরাইলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে এ ঘোষণা দেন জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইস উদ্দিন।
তিনি বলেন, আমরা এখানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকার নিয়ে এসেছি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি আদায়ের জন্য এসেছি। আমাদের ওপর নির্বিচারে পুলিশ হামলা চালিয়েছে। এটি সম্পূর্ণ অরাজকতা এবং অন্যায়। আমরা কারো বিরুদ্ধে এখানে কথা বলতে আসিনি। কোনো ষড়যন্ত্র করতে আসিনি। আমাদের অধিকার চাইতে, আমাদের দাবি আদায় করতে এসেছি। দাবি আদায় না করে আমরা ঘরে ফিরব না। দাবি আদায়ের আগ পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাটডাউন চলবে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষা ও পরীক্ষা কার্যক্রম চলবে না।
বক্তব্যকালে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “আমার ছাত্রদের চোখের সামনে কেউ আঘাত করলে, তা সহ্য করা হবে না। আমাদের আন্দোলন থামবে না যতক্ষণ না যৌক্তিক দাবি মানা হচ্ছে।”
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘আবাসন চাই, বঞ্চনা নয়’, ‘হামলার বিচার চাই’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে কাকরাইল মসজিদের সামনে অবস্থান করছেন তারা। ক্লান্ত হলেও আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়াননি কেউ, কেউ কেউ রাত কাটিয়েছেন রাস্তায় ঘুমিয়ে।
আন্দোলনকারীদের চার দফা দাবি হলো—
১. ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি চালু,
২. প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট অনুমোদন,
৩. দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ একনেক সভায় অনুমোদন ও বাস্তবায়ন,
৪. ১৪ মে পুলিশের হামলার তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা।
উল্লেখ্য, গতকাল শিক্ষার্থীরা লংমার্চে গেলে পুলিশ টিয়ার গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও গরম পানি ছুঁড়ে দেয়। শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ শতাধিক আহত হয়েছেন। রাতেও উত্তপ্ত ছিল কাকরাইল চত্বর।
পরবর্তীতে রাতে উপদেষ্টা মাহফুজ সামনে বিফ্রিং করতে আসেন। বিফ্রিংয়ে অসন্তুষ্ট হন শিক্ষার্থীরা। এ সময় উপদেষ্টা মাহফুজকে উদ্দেশ্য করে ভুয়া ভুয়া স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। বক্তৃতার একপর্যায়ে তাকে লক্ষ্য করে আন্দোলনকারীদের মধ্য থেকে বোতল ছুঁড়ে মারেন একজন। উপদেষ্টা বিফ্রিং বন্ধ করে চলে যান। উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের বক্তব্যে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। এখনো তারা কাকরাইলে অবস্থান করছেন।