বন্ধুর গার্লফ্রেন্ডকে ‘বেবি’ ডাকায় ইবি শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ

New-Project-11-1.jpg

ইসলামী বিশ্ববিদ্যায়

২৪ ঘণ্টা বাংলাদেশ

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) এক শিক্ষার্থীকে ডেকে নিয়ে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তারই সহপাঠীদের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী দাবি করেছেন, ‘বেবি’ সম্বোধনের কারণে একটি ব্যক্তিগত বিরোধের জেরে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (৫ মে) মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (আইআইইআর) ভবনের পাশে। ভুক্তভোগী মোস্তাফিজুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। অভিযুক্তরা একই বিভাগের শিক্ষার্থী লুমান, হৃদয়, সাজিদ, রনক, আলিফ এবং হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী হান্নান।

ভুক্তভোগীর অভিযোগ

মোস্তাফিজুর রহমান অভিযোগ করেন, “রাত প্রায় ১টার দিকে আমি একটি দোকানে বড় ভাইদের সঙ্গে ছিলাম। পরে রুমে ফেরার সময় লুমান আমাকে চা খাওয়ার কথা বলে ডেকে নেয়। তার সঙ্গে ছিল বাকিরাও। তারা আমাকে হাঁটতে হাঁটতে মীর মুগ্ধ সরোবরের দিকে নিয়ে যেতে চায়। আমি রাজি না হলে তারা স্বাভাবিকভাবে বসতে বলে। কিন্তু কিছুক্ষণ পর তারা আমাকে ঘিরে ধরে গালিগালাজ শুরু করে এবং একপর্যায়ে শারীরিকভাবে আক্রমণ করে।”

তিনি আরও বলেন, “আলিফ অভিযোগ তোলে যে আমি নাকি তার গার্লফ্রেন্ডকে ‘বেবি’ বলেছি, আর লুমান বলে আমি তাকে ‘প্লেবয়’ বলেছি। তারপর হান্নান আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় এবং সবাই মিলে আমাকে মারধর করে। এরপর আমাকে কলাবাগানের ভেতরে নিয়ে যায় এবং হুমকি দেয়—‘তোকে মেরে ফেলবো, তোর বাপকে কল দিস’। ভিডিও করার চেষ্টা করলে তারা মোবাইল কেড়ে নেয়। আমি সুযোগ পেয়ে দৌড়ে পালিয়ে আসি।”

অভিযোগ অস্বীকার অভিযক্তের

অন্যদিকে অভিযুক্তরা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাদের ভাষ্য, “আমরা বন্ধুরা মিলে রাতের বেলা হাঁটতে বের হয়েছিলাম। তখন মোস্তাফিজুরকে ডেকে বলি, ‘তোর নামে মেয়েরা অভিযোগ করেছে, তুই মেয়েদের টিজ করিস।’ তখন সে উত্তেজিত হয়ে আমাদের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়ে। আমরা কোনো মারধর করিনি।”

অভিযুক্তদের একজন বলেন, “মোস্তাফিজুর প্রায় সময় মেয়েদের নিয়ে অশালীন মন্তব্য করে। আমরা তাকে সতর্ক করতে চেয়েছিলাম মাত্র। কোনো ধরনের শারীরিক আক্রমণের ঘটনা ঘটেনি। বরং সে ফোন ফেলে চলে গেলে আমরা পরে সেটি ফিরিয়ে দিই।”

এদিকে পুরো ঘটনাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে নিরাপত্তা ও সহাবস্থানের বিষয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। শিক্ষার্থীদের একাংশ অভিযোগ করছে, নানা ধরনের ব্যক্তিগত বিরোধ কিংবা সম্পর্কের জেরে এখন ক্যাম্পাসে সহিংসতা বাড়ছে, যা শিক্ষার পরিবেশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

প্রতিক্রিয়াহীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে ঘটনার সত্যতা যাচাই ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন প্রশাসনের এক কর্মকর্তা, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শর্তে।

ঘটনার তদন্তে একটি নিরপেক্ষ কমিটি গঠনের দাবি উঠেছে শিক্ষার্থীদের একাংশ থেকে। একই সঙ্গে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদার ও আচরণগত শৃঙ্খলার ওপর নজরদারি বৃদ্ধিরও আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষকেরা।

Leave a Reply

scroll to top