ঈদের ছুটিতে হল খোলা রাখার দাবিতে ইবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন

New-Project-3-16.jpg

হল খোলা রাখার দাবিতে ইবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন

২৪ ঘণ্টা বাংলাদেশ ইবি প্রতিনিধি

ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আবাসিক হলগুলো খোলা রাখার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা। আগামী ৩১ মে থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ ও পরীক্ষাসমূহ বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়েছে। এর মধ্যে ৪ জুন থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত হলগুলো বন্ধ রাখার প্রস্তাব করেছে প্রভোস্ট কাউন্সিল, যা নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মঙ্গলবার (২৮ মে) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে মানববন্ধন করেন বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী। তারা ‘ছুটির নামে হল বন্ধের প্রহসন মানি না’, ‘শিক্ষার্থীদের বিড়ম্বনা আর না’, এবং ‘ঢাবি-রাবি-জাবি পারলে ইবি কেন নয়?’—এমন সব স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে অবস্থান নেন।

হল বন্ধের বিপক্ষে শিক্ষার্থীদের যুক্তি

শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, ঈদের সময়ে হল বন্ধ রাখা হলে অনেকেরই চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। বিশেষ করে যারা বিভিন্ন কারণে ঈদে বাড়ি যেতে চান না বা যেতে পারেন না—তাদের নিরাপদ আবাসন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। এছাড়া ঈদের পরপরই ৪৭তম বিসিএসসহ একাধিক চাকরির নিয়োগ পরীক্ষা রয়েছে, যেগুলোর প্রস্তুতি চলমান। হল বন্ধ থাকলে সেই প্রস্তুতিতে বড় ধরনের ব্যাঘাত ঘটবে বলে মনে করেন তারা।

এছাড়াও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের গবেষণা, থিসিস, প্রজেক্ট ও ল্যাব কার্যক্রম বন্ধ থাকলে গবেষণার ধারাবাহিকতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা।

প্রশাসনের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও প্রতিক্রিয়া

মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে জানা যায়, তিনি অনুপস্থিত। পরে তারা কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপি প্রদান করেন।

কোষাধ্যক্ষ শিক্ষার্থীদের বলেন, “যারা ছুটির সময় হলে থাকতে চাও, তারা নিজ নিজ হলের প্রভোস্টকে লিখিতভাবে জানাও। প্রভোস্টগণ বিষয়টি প্রভোস্ট কাউন্সিলে উপস্থাপন করবেন। যদি প্রভোস্ট কাউন্সিল ইতিবাচক মত দেয়, তবে প্রশাসনও সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবে।”

প্রভোস্ট কাউন্সিলের অবস্থান

এ বিষয়ে প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ড. আব্দুল গফুর গাজী বলেন, “হল খোলা রাখার বিষয়ে আমরা ইতিবাচক। ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ হলের প্রভোস্টকে লিখিতভাবে জানাতে বলা হয়েছে। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী হলে থাকতে আগ্রহ দেখালে হল খোলা রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

প্রেক্ষাপট

ঢাকা, রাজশাহী ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছুটির সময়েও প্রয়োজন অনুযায়ী আবাসিক হল খোলা রাখার নজির রয়েছে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একই ধরনের সুবিধা দাবি করছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও প্রভোস্ট কাউন্সিল যদি সময়মতো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়, তবে এবারের ঈদে শিক্ষার্থীরা নিরাপদ ও স্বস্তিতে হলে অবস্থান করতে পারবেন।

এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য এখন সবাই অপেক্ষা করছে প্রভোস্ট কাউন্সিলের সুপারিশ ও প্রশাসনের ঘোষণার।

Leave a Reply

scroll to top