ইশরাকের মেয়র পদ নিয়ে রিটের আদেশ আগামীকাল

New-Project-24.png

ইশরাক হোসেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া গেজেটের বৈধতা নিয়ে এবং শপথ পড়ানো থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা চেয়ে রিটের আদেশ পিছিয়ে আগামী বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেছেন আদালত। আজ বুধবার (২১ মে) দুপুর সোয়া ১টায় বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এর আগে, এ রিটের ওপর গতকাল মঙ্গলবার (২০) দুপুর ১টায় শুনানি শুরু হয়ে তা প্রায় ২টা পর্যন্ত চলে। এরপর আদালতে বিকেল ৪টা ১০ মিনিট থেকে প্রায় সোয়া ৫টা পর্যন্ত শুনানি চলে। তারপর আদেশের জন্য আজ বুধবার সাড়ে ১২টার সময় নির্ধারণ করা হয়। সেই অনুযায়ী আজ বুধবার ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও আইনজীবী কায়সার কামাল এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজুর রহমান মিলন রিট খারিজের পক্ষে শুনানি করেন। পরে এর জবাব দেন রিটের পক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেন। দুই পক্ষের শুনানি শেষে আদেশের জন্য ফের বৃহস্পতিবার দিন ধার্য্য করেন আদালত।

গতকাল (মঙ্গলবার) হাইকোর্টে একটি উল্লেখযোগ্য আইনি বিতর্কের জন্ম হয়, যখন আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেন নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায়ের কিছু ‘ভুল’ তুলে ধরে রুল জারির আবেদন জানান। তিনি আদালতকে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্তে কিছু ত্রুটি ছিল এবং এর প্রতিকার প্রয়োজন।

তবে, এই আবেদনের বৈধতা নিয়ে আইনজীবী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং ব্যারিস্টার কায়সার কামাল মত দেন যে, নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায় বা আদেশের বিরুদ্ধে যদি কোনো পক্ষ সংক্ষুব্ধ হয়, তবে তাদের নির্বাচনী আপিল ট্রাইব্যুনালেই আপিল করতে হবে। তারা জোর দিয়ে বলেন, এই আপিল করার অধিকার কেবল মামলার বিবাদী পক্ষের (যেমন, এই ক্ষেত্রে ফজলে নূর তাপস) রয়েছে। একজন আইনজীবী, যিনি মামলার মূল পক্ষ নন, তিনি কেবল রিটকারী হিসেবে সরাসরি হাইকোর্টে আসতে পারেন না। তাদের মতে, এই ধরনের রিট আবেদন আইনি প্রক্রিয়ার নিয়ম মেনে না হওয়ায় খারিজযোগ্য।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয়। তাতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র নির্বাচিত হন। এরপর নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ফল বাতিল চেয়ে ২০২০ সালের ৩ মার্চ মামলা করেন ইশরাক। পরে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের আগস্ট মাসে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের সব সিটি করপোরেশনের মেয়রদের অপসারণ করা হয়।

এর মধ্যে গত ২৭ মার্চ ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণার ফল বাতিল করে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে ১০ দিনের মধ্যে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেন নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল। এ রায় পাওয়ার পর ২৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন।

এদিকে, গেজেট প্রকাশের দিন ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে দেওয়া রায় ও ডিক্রির বিরুদ্ধে আপিল করতে আইনি নোটিশ দেন রফিকুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ নামে দুই ব্যক্তি। নোটিশে গেজেট প্রকাশ এবং ইশরাককে শপথ নেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়।

তখন ওই দুই ব্যক্তির আইনজীবী বলেন, যথাযথ প্রক্রিয়া না মেনে দ্রুত রায়টি দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করেছিলাম, ইসি এই আদেশকে চ্যালেঞ্জ করবে। চ্যালেঞ্জ করল না। ট্রাইব্যুনাল এমন কোনো আদেশ দিতে পারেন না, যে আদেশের কোনো কার্যকারিতা নেই।

Leave a Reply

scroll to top