ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র পদে বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের শপথ গ্রহণ নিশ্চিতের দাবিতে টানা পঞ্চম দিনের মতো নগর ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তার সমর্থকেরা। রোববার (১৮ মে) সকাল থেকেই ‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে তারা নগর ভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান শুরু করেন। এতে ভবনের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো।
উপদেষ্টা আসিফের পদত্যাগ দাবি
আজকের কর্মসূচিতে নতুন করে ইশরাকপন্থিরা ডিএসসিসির মেয়রের উপদেষ্টা আসিফ আহমেদ খানের পদত্যাগ দাবি করেছেন। তারা অভিযোগ করেন, আসিফ বর্তমান প্রশাসনের হয়ে ‘চক্রান্তে’ লিপ্ত এবং ইশরাকের শপথ গ্রহণ প্রক্রিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে বিলম্বিত করছেন।
বিক্ষোভকারীরা ‘জনতার মেয়র ইশরাক ভাই, অন্য কোনো মেয়র নাই’, ‘তালাবদ্ধ শহর ভবন, কার স্বার্থে বন্ধ প্রশাসন’, ‘চক্রান্তকারীদের বিচার চাই’, ‘উপদেষ্টা আসিফের পদত্যাগ চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও বিক্ষোভে অংশ নেওয়া আমিনুল ইসলাম বলেন, “ইশরাক ভাইকে ট্রাইব্যুনাল মেয়র ঘোষণা করেছে। কিন্তু এখনো শপথ পড়ানো হচ্ছে না। এর পেছনে কিছু কুচক্রী মহল কাজ করছে। বিশেষ করে মেয়রের উপদেষ্টা আসিফ—উনি বারবার বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দিয়ে ইশরাক ভাইয়ের শপথ ঠেকাতে চাইছেন।”
পুরান ঢাকা থেকে আসা শিক্ষার্থী রাশেদা খাতুন বলেন, “আমরা এখনো বিশ্বাস করি, আদালতের রায়কে সম্মান জানিয়ে ইশরাক ভাইকে শপথ গ্রহণ করতে দেওয়া হবে। কিন্তু যদি প্রশাসন ও উপদেষ্টা আসিফ এই প্রক্রিয়ায় বাধা দেন, তাহলে আমাদের আন্দোলন আরও তীব্র হবে।”
গেজেট প্রকাশের ২০ দিনেও হয়নি শপথ
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ইশরাক হোসেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপসের কাছে পরাজিত হন। তবে নির্বাচনী অনিয়মের অভিযোগ তুলে আদালতে যান তিনি। দীর্ঘ শুনানি শেষে গত মার্চে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল ইশরাককে বৈধ প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে এবং তাপসকে অযোগ্য ঘোষণা করে। এরপর গেজেট প্রকাশিত হলেও এখনো তার শপথ গ্রহণ হয়নি।
ইশরাক হোসেনের আইনজীবীরা জানান, শপথ গ্রহণের সব প্রস্তুতি তাদের রয়েছে, কিন্তু সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো ‘অকারণে’ প্রক্রিয়া বিলম্ব করছে। এদিকে ডিএসসিসির একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রশাসন বিপাকে রয়েছে এবং বিষয়টি রাজনৈতিক চাপের মধ্যে পড়েছে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নগর ভবনের প্রধান ফটক তালাবদ্ধ ছিল এবং আন্দোলনকারীরা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছিলেন।