বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে আবারও নগর ভবন অবরোধ করেছেন তার সমর্থকরা। আজ শনিবার (২৪ মে) সকাল থেকে আন্দোলনকারীরা নগর ভবনের সামনে অবস্থান নেওয়ায় সিটি কর্পোরেশনের নিয়মিত সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হয় এবং অনেক সেবা প্রত্যাশী এসে ফিরে যান।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে করা রিট মামলা খারিজ করা হয়। পরে তিনি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপ পর্যবেক্ষণের জন্য ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা সময় দিয়েছিলেন। সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার পর শনিবার তার সমর্থকরা আবার নগর ভবনে জড়ো হন।
ইশরাকের আহ্বান ও আন্দোলনের অবস্থান
আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে মোবাইলফোনে ইশরাক হোসেন বলেন, “আমরা যেহেতু সরকারকে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলাম, মাঝখানে শুক্রবার থাকায় সেদিন কোনো কাজ হয়নি। আমরা আজ আরেকদিন সময় দেব, এর মধ্যে যার যার কাজ যেটা আছে, সেটা যেন সম্পন্ন করেন। সরকারের গাফিলতির কারণে নগরবাসীর যাতে কোনো কষ্ট না হয়। এটা আমি আশা রাখি।”
তিনি আরও বলেন, “আমার সঙ্গে যখন অন্যায় শুরু করলো এই সরকার, তখন সিটি কর্পোরেশনের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। আমরা একে অন্যের পাশে দাঁড়ালে কোনো অপশক্তি আমাদের গ্রাস করতে পারবে না। আপনারা যে কারণে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন আশা করি, দ্রুততম সময়ের মধ্যে সমাধান পাবো।”
ঢাকাবাসীর সমন্বয়কের হুঁশিয়ারি
নগর ভবনে উপস্থিত ইশরাক হোসেনের সমর্থকদের সংগঠন ‘ঢাকাবাসী’র সমন্বয়কারী ও সাবেক সচিব মশিউর রহমান জানান, “এখনো জনতার মেয়র ইশরাক হোসেনের শপথের প্রক্রিয়া শুরু করেনি সরকার। ফলে আজও নগর ভবনে ঢাকাবাসী আন্দোলন করছেন। আজকের মধ্যে সরকার শপথের প্রক্রিয়া শুরু না করলে উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য সরকার দায়ী থাকবে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সরকারের অনেকেই জুলাইয়ের চেতনা ধারণ করছেন না। স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার সাবেক এপিএস মোয়াজ্জেমকে দেশত্যাগে দুর্নীতি দমন কমিশন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এপিএস তার বসের নির্দেশনা ছাড়া দুর্নীতি করতে পারেন না। হয়তো একদিন দেখা যাবে তার বসকেও (উপদেষ্টা আসিফ) দুদক নিষেধাজ্ঞা দেবে।”
সিটি কর্পোরেশনের কার্যক্রমে অচলাবস্থা
ডিএসসিসির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আজও সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নগর ভবনে গিয়ে ফিরে এসেছেন। ভবনের সব ফটকে তালা ঝুলছে এবং কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
তবে, কর্পোরেশনের অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী নগর ভবনের নিচতলার জরুরি পরিচালনা কেন্দ্রের কক্ষে অবস্থান নিয়েছেন এবং সিটি কর্পোরেশনের সচিবসহ অনেকেই এই কক্ষে জরুরি ফাইলপত্র সই করছেন বলে জানা গেছে। এই অচলাবস্থা নগরবাসীর দৈনন্দিন সেবায় বিরূপ প্রভাব ফেলছে।