মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ইরানে একাধিক পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় ইসরায়েলের বিমান হামলার পর এবার ইসরায়েলে পাল্টা হামলা শুরু করেছে ইরান। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, ইতোমধ্যে ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে শতাধিক ড্রোন নিক্ষেপ করেছে ইরান।
জানা গেছে, ইসরায়েলের রাতভর চালানো হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি এবং রেভল্যুশনারি গার্ডের প্রধান জেনারেল হোসেইন সালামিসহ আরও অনেকেই নিহত হয়েছেন। এই হামলার পরই তেহরান পাল্টা পদক্ষেপের ঘোষণা দেয়।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র অ্যাফি ডেফরিন শুক্রবার জানান, “১০০টিরও বেশি ড্রোন ইসরায়েলের দিকে নিক্ষেপ করা হয়েছে। সকল আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চালু রয়েছে এবং এগুলো হুমকি প্রতিহত করতে কাজ করছে। এটি একেবারে ভিন্ন ধরনের পরিস্থিতি—আমরা কঠিন সময়ের মুখোমুখি হচ্ছি। তাই আমাদের ধৈর্য ও সাহসের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।”
তবে, ড্রোনগুলো ঠিক কোথায় আঘাত হেনেছে বা কতটি ড্রোন প্রতিহত করা সম্ভব হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য এখনও জানানো হয়নি। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সতর্ক করা হয়েছে যে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে।
এদিকে, ইরানে ইসরায়েলি হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যে সৃষ্ট সামরিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে জর্ডান সাময়িকভাবে তাদের আকাশসীমা বন্ধ ঘোষণা করেছে। জর্ডানের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (সিএআরসি)-এর প্রধান হাইথাম মিস্তো জানান, এটি একটি সতর্কতামূলক পদক্ষেপ, যা আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল নিয়মনীতি ও নিরাপত্তা নির্দেশনা অনুযায়ী নেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সময় অনুযায়ী এই নিষেধাজ্ঞা পর্যালোচনা করা হবে।
ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ফ্লাইটরাডার২৪-এর তথ্য অনুযায়ী, আজ শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে ইসরায়েল ও ইরান উভয় দেশের আকাশপথ একপ্রকার ফাঁকা ছিল, কোনো বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ চলাচল করছিল না।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা মধ্যপ্রাচ্যে একটি বড় ধরনের সংঘাতের জন্ম দিতে পারে, যা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য গুরুতর হুমকি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং দ্রুত উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানাচ্ছে।