মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান উত্তেজনা নতুন মোড় নিয়েছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) সতর্ক করেছে যে, আগামী দিনগুলোতে ইরান আরও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে পারে। অন্যদিকে, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ হলে তাদের পাল্টা আক্রমণও বন্ধ হবে। এই পাল্টাপাল্টি অবস্থানে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করছে।
আইডিএফ-এর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফি ডেফরিন এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ইসরায়েলের জন্য “চ্যালেঞ্জিং দিন” সামনে আসছে। তিনি বলেন, “আগামী দিনগুলোতে আরও ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ এবং আঘাতের আশঙ্কা রয়েছে।” তার এই মন্তব্য ইসরায়েলের নাগরিকদের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
ডেফরিন আরও বলেন, ইসরায়েলি বিমান বাহিনী “এক মুহূর্তের জন্যও হামলা থামাচ্ছে না।” তিনি দাবি করেন, “এই মুহূর্তেও আমরা তেহরানে ডজনেরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাচ্ছি।” আইডিএফের লক্ষ্য ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি এবং সামরিক সক্ষমতার ওপর আঘাত বাড়ানো, যাতে ইসরায়েলের অভ্যন্তরে (ঘরোয়া ফ্রন্টে) ঝুঁকি কমানো যায়। এই বিবৃতি থেকে স্পষ্ট যে, ইসরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে তার সামরিক অভিযান আরও তীব্র করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
অন্যদিকে, শুক্রবার শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলার পর ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি প্রথম প্রকাশ্যে মন্তব্য করেছেন। তেহরানে কূটনীতিকদের সামনে দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি স্পষ্ট বার্তা দেন: “যদি আগ্রাসন বন্ধ হয়, তাহলে আমাদের প্রতিক্রিয়াও বন্ধ হবে।” তার এই মন্তব্য থেকে বোঝা যায়, ইরান ইসরায়েলের হামলার জবাবেই পাল্টা আক্রমণ চালাচ্ছে এবং ইসরায়েলি হামলা বন্ধ হলে তারা তাদের অভিযান স্থগিত করতে রাজি।
তবে, আরাগচির এই মন্তব্যের পর ইসরায়েলের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এর মধ্যেই রোববারও ইরানের বিভিন্ন অঞ্চলে ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত রয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, উভয় পক্ষের এই পাল্টাপাল্টি অবস্থান মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতের গভীরতা আরও বাড়াতে পারে। ইসরায়েলের অব্যাহত হামলা এবং ইরানের প্রতিশোধমূলক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার হুমকি পরিস্থিতিকে অত্যন্ত অস্থিতিশীল করে তুলেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই সংঘাত নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে আঞ্চলিক শান্তি মারাত্মকভাবে ব্যাহত হতে পারে।