সামরিক শক্তিতে ইরান-ইসরায়েল মুখোমুখি: কার পাল্লা ভারি?

New-Project-17-2.jpg

সামরিক শক্তিতে ইরান-ইসরায়েল মুখোমুখি: কার পাল্লা ভারি?

২৪ ঘণ্টা বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মধ্যপ্রাচ্যে আবারো উত্তপ্ত পরিস্থিতি। ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনায় নতুন করে আলোচনায় এসেছে দুই দেশের সামরিক সক্ষমতা। প্রযুক্তি ও সমরাস্ত্র ব্যবহারে এগিয়ে ইজরায়েল, তবে সেনা সংখ্যা ও স্থল-নৌ শক্তিতে পিছিয়ে নেই ইরানও। ২০২৫ সালের গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার র‍্যাংকিং অনুযায়ী, সামরিক শক্তিতে ইসরায়েল রয়েছে ১৫তম অবস্থানে, আর একধাপ নিচেই ১৬তম স্থানে রয়েছে ইরান।

সাম্প্রতিক সংঘাতে ইসরায়েল যখন ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ চালিয়ে ইরানের অভ্যন্তরে হামলা করে, তখন দ্রুত জবাব আসে তেহরান থেকে। তেল আবিবে পাল্টা আঘাত হানায় স্পষ্ট—দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা এখন তুঙ্গে। এই প্রেক্ষাপটে দুই দেশের সামরিক কাঠামো ঘিরে চলছে বিস্তর বিশ্লেষণ।

সক্রিয় সেনা সদস্যের দিক থেকে ইরান অনেকটাই এগিয়ে। দেশটির অ্যাক্টিভ সেনা সদস্য সংখ্যা ৬ লাখ ১০ হাজার, আর রিজার্ভ ফোর্সে রয়েছে আরও ৩ লাখ। অপরদিকে, ইসরায়েলের সক্রিয় সেনা সদস্য ১ লাখ ৭০ হাজার এবং রিজার্ভে আছে সাড়ে ৪ লাখ সদস্য।

ইরানের সংগ্রহে রয়েছে প্রায় ১,৭০০ ট্যাংক ও ৬৫,৯০০ সাঁজোয়া যান। পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের কামান ও রকেট লঞ্চারের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। তুলনামূলকভাবে ইসরায়েলের কাছে রয়েছে ১,৩০০ ট্যাংক এবং প্রায় ৩৬,০০০ সাঁজোয়া যান।

নৌ শক্তিতেও ইরান এগিয়ে। তাদের নৌবহরে রয়েছে শতাধিক যুদ্ধজাহাজ, যার মধ্যে ২৫টি সাবমেরিনও আছে। ইসরায়েল সেখানে অনেকটাই পিছিয়ে, তাদের কাছে আছে মাত্র পাঁচটি সাবমেরিন এবং সীমিতসংখ্যক নৌযান।

বিমান বাহিনীতে ইসরায়েল স্পষ্টভাবে এগিয়ে। দেশটির বিমানবহরে রয়েছে ৬১১টি বিমান, যার মধ্যে রয়েছে ২৪০টি ফাইটার জেট—যেমন: F-15, F-16 ও F-35। ইরানের রয়েছে ৫৫১টি বিমান, এর মধ্যে ১৮৮টি যুদ্ধবিমান হলেও সেগুলোর অনেকগুলোই পুরনো মডেলের।

ইরান নিজস্ব প্রযুক্তিতে স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘপাল্লার ক্রুজ ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করেছে। তবে আকাশ প্রতিরক্ষায় ইসরায়েল অনন্য, তাদের ‘আইরন ডোম’ ও ‘প্যাট্রিয়ট’ সিস্টেম বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত। ইরানও আকাশ প্রতিরক্ষায় বিনিয়োগ করছে, তবে সে দিক থেকে তারা এখনো তুলনামূলক পিছিয়ে।

সমরাস্ত্র উন্নয়ন ও প্রযুক্তিগত দিক থেকে ইসরায়েল এগিয়ে থাকলেও, সংখ্যা, নৌ ও স্থলপথের শক্তিতে ইরানও হালকাভাবে দেখার মতো নয়। দুই দেশের শক্তির ভারসাম্য প্রায় সমান বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তবে বাস্তব যুদ্ধক্ষেত্রে কে এগিয়ে থাকবে, তা নির্ধারিত হবে কৌশল ও সময়ের ওপর।

Leave a Reply

scroll to top