গতকাল রাতে ভারত আজাদ কাশ্মীরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এ হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ২৬ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। এর জবাবে পাকিস্তান পাল্টা আক্রমণ চালিয়েছে বলে জানিয়েছে। পাকিস্তানের দাবি, তাদের হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন এবং ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে।
এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির আঁচ পৌঁছে গেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও। বাংলাদেশের ব্যবহারকারীদের কেউ পাকিস্তানের পক্ষে, কেউ ভারতের হয়ে মত দিচ্ছেন। কিন্তু আমাদের প্রশ্ন করা উচিত— আমরা আসলে কাকে সমর্থন করছি? কেন করছি?
মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করলে, যুদ্ধ কখনোই কাম্য নয়। রাশিয়া-ইউক্রেন কিংবা মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ বিশ্বকে যেভাবে অর্থনৈতিক ও মানবিক সংকটে ফেলেছে, তার ভয়াবহতা এখনও চলছে। এর মাঝে যদি ভারত ও পাকিস্তানের মতো পারমাণবিক শক্তিধর দুই দেশের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ শুরু হয়, তাহলে তার অভিঘাত শুধু সীমান্তে সীমাবদ্ধ থাকবে না— গোটা দক্ষিণ এশিয়া তাতে কেঁপে উঠবে।
বাংলাদেশও এই পরিস্থিতি থেকে আলাদা নয়। ভারতের আকাশসীমা ব্যবহারে বাধার কারণে ইতোমধ্যেই বেশ কিছু আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে এর প্রভাব পড়বে আমাদের আমদানি-রপ্তানিতে, জ্বালানি সরবরাহে এবং সামগ্রিক অর্থনীতিতে। এমনকি মানবিক নিরাপত্তাও ঝুঁকির মুখে পড়বে।
দুঃখজনকভাবে, অনেকেই শুধুমাত্র ধর্মীয় আবেগের ভিত্তিতে পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না— মুসলমান সংখ্যায় বিশ্বে ভারতের অবস্থান প্রথম। যুদ্ধ হলে শুধু হিন্দুরা নয়, ভারতীয় মুসলমানরাও জীবন হারাবেন। ক্ষেপণাস্ত্রের কোনো ধর্ম বা জাতপাত নেই। এটি যেখানে পড়ে, শুধু ধ্বংসই ডেকে আনে।
এ কারণেই এখন সময় আবেগ দিয়ে নয়, বরং যুক্তি দিয়ে ভাবার। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিদ্যমান সংকটের সমাধান হওয়া উচিত কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে। যুদ্ধ কখনোই সমস্যার স্থায়ী সমাধান নয়। এটি কেবল প্রাণহানি, ধ্বংস আর শোক নিয়ে আসে।
আমরা যুদ্ধ চাই না— আমরা চাই শান্তি। সংঘাত নয়, আলোচনাই হোক সমাধানের পথ।