জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলের একটি কক্ষে এক ছাত্রীর প্রবেশকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে তুমুল আলোচনা শুরু হয়েছে।তথ্যসূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বিধিমালা লঙ্ঘন করে এক ছাত্রী ছাত্রদের হলে প্রবেশ করেন এবং তার সঙ্গে থাকা কয়েকজন ছাত্রের সঙ্গে ছবি তোলেন।
গত বৃহস্পতিবার (২২ মে) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ছবিতে দেখা যায়, এক ছাত্রী ও কয়েকজন ছাত্র হলে একটি কক্ষে বসে আছেন। ছবির সূত্র ধরে জানা যায়, ছড়িয়ে পড়া ছবিতে থাকা ছাত্রীর নাম ইশরাত। তার সঙ্গে থাকা ছাত্ররা হলেন এফ. এম. প্রত্যয়, আমিনুল ইসলাম, সামিদুল ইসলাম এবং মো. রাশেদ।তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫২তম ব্যাচের (২০২২-২৩) বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য প্রণীত শৃঙ্খলা সংক্রান্ত অধ্যাদেশ ২০১৮-এর হল সংক্রান্ত বিধিমালার (ঘ) ধারায় উল্লেখ আছে, শৃঙ্খলা ভঙ্গ কিংবা অসদাচরণের জন্য এক জন হল প্রভোস্ট তার হলের ছাত্র/ছাত্রীকে যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে সর্বোচ্চ ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার অথবা সর্বোচ্চ ২ হাজার টাকা জরিমানা করতে পারবেন।প্রয়োজন মনে হলে বা বহিষ্কার যথেষ্ট না হলে তিনি বিষয়টি উপাচার্যের নিকট পাঠাবেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই ছাত্রী হল প্রভোস্টের অনুমতি ছাড়াই প্রবেশ করেছিলেন। এক্ষেত্রে তার সঙ্গে থাকা ছাত্ররাও হল প্রশাসনের অনুমতি নেননি। তবে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা দাবি করেছেন ছবিটি গত বছর হল চালু হওয়ার সময়ের।
ছবিতে থাকা শিক্ষার্থীদের একজন আমিনুল জানান, ঘটনাটি ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসের। সে সময় হলটি নতুন চালু হয়েছিল এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না। বান্ধবীকে কক্ষ দেখানোর উদ্দেশ্যেই তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
ইশরাতও জানান, তিনি সাময়িক সময়ের জন্য গিয়েছিলেন এবং বিষয়টি এখন হঠাৎ করে ভাইরাল করায় এটি তিনি ব্যক্তিগত আক্রমণ বলে মনে করছেন।
অন্যদিকে ছাত্র সামিদুল বলেন, ছবিটি হল উদ্বোধনের দিনের। ওই সময় হল কর্তৃপক্ষের কোনো বাধা ছিল না, তাই ঘটনাটি তাদের কাছে স্বাভাবিক মনে হয়েছিল।
তিনি এ ঘটনার জন্য প্রশাসনের দায়িত্বহীনতাকেই দায়ী করেন।
হল প্রভোস্ট অধ্যাপক মামুন হোসেন জানান, ঘটনার তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. রাশেদুল ইসলাম বলেন, নীতিমালার বাইরে গিয়ে কেউ কাজ করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।বিষয়টি হলে প্রভোস্ট ও ওয়ার্ডেন কমিটির সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করবে।
উল্লেখ্য,জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য প্রণীত শৃঙ্খলা সংক্রান্ত অধ্যাদেশ ২০১৮-এর হল সংক্রান্ত বিধিমালার (ভ) ধারার (২) উপধারায় উল্লেখ আছে,‘ছাত্রদের হলে প্রভোস্টের লিখিত অনুমতি ছাড়া কোনো ছাত্রী বা নারী প্রবেশ করতে পারবে না।’