যদি হেলিকপ্টারে উঠেই যেতাম, বাঁচার কোন চান্সই থাকত না- তামিম

New-Project-35.jpg

যদি হেলিকপ্টারে উঠেই যেতাম, বাঁচার কোন চান্সই থাকত না

২৪ ঘণ্টা বাংলাদেশ

“আমি যদি হেলিকপ্টারে উঠেই যেতাম, তাহলে আর বাঁচার কোন চান্সই থাকত না”—এই কথাগুলো বলছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন অধিনায়ক, জাতির ভালোবাসার ক্রিকেটার তামিম ইকবাল। সম্প্রতি নট আউট নোমানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের মৃত্যুমুখ থেকে ফিরে আসার অভিজ্ঞতা শোনান তিনি। তার কণ্ঠে ছিল তীব্র কৃতজ্ঞতা, অবিশ্বাস, এবং জীবনের প্রতি এক নতুন উপলব্ধির ছাপ।

চলতি বছরের মার্চ মাসের শেষ দিকে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ খেলার সময় মাঠেই হার্ট অ্যাটাক করেন তামিম। চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ চেষ্টা আর সৃষ্টিকর্তার কৃপায় পেয়েছেন নতুন জীবন। মৃত্যুর খুব কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন তামিম। জানা যায়, ওই সময় তার শরীরে ২২ মিনিট কোনো পালস ছিল না। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন সাবেক এই ওপেনার। চিকিৎসকদের ভাষ্য অনুযায়ী, এটি ছিল প্রায় অসম্ভব এক পুনরাগমন।

সম্প্রতি নট আউট নোমানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের এই মৃত্যুমুখ থেকে ফিরে আসার অভিজ্ঞতা শুনিয়েছেন তামিম। তার কণ্ঠে ছিল তীব্র কৃতজ্ঞতা, অবিশ্বাস এবং জীবনের প্রতি এক নতুন উপলব্ধির ছাপ।

একটা ভুল নামা, আর তার পরিণতি জীবন বাঁচানো!

সেই দিনটির কথা স্মরণ করে তামিম বলেন, “সেদিন হেলিকপ্টার নামার কথা ছিল ১ নম্বর মাঠে। কিন্তু ভুল করে ২ নম্বর মাঠে নেমে যায়। যদি ঠিক জায়গায় নামত, আমি নিশ্চিতভাবেই হেলিকপ্টারে উঠে যেতাম। আর যদি উঠতাম, তাহলে আর ফিরতে পারতাম না, কোনভাবেই না।”

ভাগ্য হয়তো এভাবেই লিখে রেখেছিল এক অলৌকিক রচনাপত্র—একটি ভুল সিদ্ধান্ত, যা হয়ে উঠল তার জীবনের শ্রেষ্ঠ রক্ষা।

“২২ মিনিট কোনো পালস ছিল না, তবুও থামেননি তিনি”

তামিম আরও বলেন, “সাধারণত চিকিৎসকরা ৪-৫ মিনিট সিপিআর দেওয়ার পর রেসপন্স না পেলে মৃত ঘোষণা করেন। কিন্তু সেদিন ডালিম ভাই ২২ মিনিট ধরে সিপিআর দিয়েছিলেন আমাকে, কোনো থেমে যাওয়ার চিন্তা ছাড়াই। ভাগ্য ভালো তিনি চিকিৎসক ছিলেন না, না হলে হয়তো চার মিনিট পরই থেমে যেতেন।”

সাধারণত এত বড় হার্ট অ্যাটাকের পরে শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গে বড় কোনো ক্ষতি হয়েই থাকে। কিন্তু তামিম বললেন, “আল্লাহর রহমতে আমার শরীরের কিছুই ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। আমি এখন পুরোপুরি ফিট।”

একজন মানুষ, যিনি কেবল ব্যাট হাতে দেশের জন্য লড়েননি, আজ জীবনযুদ্ধে নিজেই একজন বিজয়ী। এ যেন দ্বিতীয়বার জন্ম নেওয়া।

“আপনাদের দোয়ার কথা আমি কখনো ভুলবো না”

সব শেষে আবেগ চেপে রেখে তামিম বলেন, “আমার এই ফেরাটা ক্লোজ টু মিরাকল। ৯৯.৯% মানুষ এমন অবস্থা থেকে ফিরে না। আমি ফিরেছি। হয়তো আপনারা দোয়ার কথা ভুলে যাবেন, কিন্তু আমি সারা জীবন মনে রাখব।”

তামিমের এই বেঁচে ফেরা কেবল একজন ক্রিকেটারের নয়, এটি এক অনন্য যোদ্ধার জীবন ফিরে পাওয়ার গল্প। এ গল্প মনে করিয়ে দেয়—জীবনের সবচেয়ে অন্ধকার সময়েও আশার আলো থাকে। আর যদি হৃদয়ে থাকে ভালোবাসা, তবে অলৌকিকতাও হয়ে যায় সম্ভব।

Leave a Reply

scroll to top