প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক বালেগ ও সুস্থ মুমিন মুসলমানের ওপর ফরজ। ইচ্ছাকৃতভাবে ফরজ নামাজ ত্যাগ করা মারাত্মক গুনাহ। এমন গর্হিত কাজের পরিণামে মহান আল্লাহ তাআলা তাঁর রহমত ও হেফাজত তুলে নিতে পারেন।
হযরত মুআজ ইবন জাবাল (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে দশটি নসিহত করেছিলেন, যার অন্যতম ছিল— “তুমি ইচ্ছাকৃত ফরজ নামাজ ত্যাগ কোরো না। কারণ যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত ফরজ নামাজ ত্যাগ করে, তার ওপর আল্লাহর কোনো জিম্মাদারি থাকে না।” (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ২৩৮)
ভুলবশত নামাজ ছুটে গেলে করণীয়
কখনো যদি অনিচ্ছাকৃতভাবে, কোনো অসুস্থতা বা বিশেষ কোনো কারণে ওয়াক্ত মতো নামাজ আদায় না হয়, তবে পরবর্তী সময়ে তা আদায় করে নিতে হবে, যাকে বলা হয় কাজা নামাজ।
ফরজ কিংবা ওয়াজিব নামাজ ছুটে গেলে তার কাজা আদায় করা আবশ্যক। তবে সুন্নত বা নফল নামাজ ছুটে গেলে সেটির কাজা আদায় জরুরি নয়।
কাজা নামাজ যত দ্রুত সম্ভব আদায় করা উচিত। কারণ, মৃত্যু কখন এসে যায় তা কারো জানা নেই। যদি কারো দায়িত্বে কাজা নামাজ থেকে যায়, তবে পরকালে তাকে এর জবাবদিহি করতে হবে।
কুরআনুল কারিমে বলা হয়েছে:
“জাহান্নামিদের জিজ্ঞাসা করা হবে— ‘তোমরা কী কারণে সাকার (জাহান্নাম)-এ পড়লে?’ তারা বলবে— ‘আমরা নামাজি ছিলাম না। আমরা অভাবীদের আহার দিতাম না। আমরা কেবল সমালোচকদের সঙ্গে সমালোচনায় লিপ্ত ছিলাম। এবং আমরা প্রতিদান দিবসকে অস্বীকার করতাম, অবশেষে মৃত্যু এসে গেল।’”
— (সূরা মুদ্দাসসির, আয়াত: ৩৮-৪৭)
অসুস্থ অবস্থায় কাজা নামাজ আদায়
অনেকে জানতে চান, সুস্থ অবস্থায় যে নামাজ কাজা হয়েছে, তা যদি অসুস্থ অবস্থায় আদায় করতে হয়— তবে কী দাঁড়িয়ে পড়তে হবে? না কি বসে পড়া যাবে?
ফিকাহবিদ আলেমদের মতে, কাজা নামাজ যেহেতু তখন আদায় করা হচ্ছে যখন শরীর দুর্বল বা অসুস্থ, তাই সেই মুহূর্তের সামর্থ্য অনুযায়ী তা আদায় করলেই যথেষ্ট। বসে বসেও যদি রুকু-সিজদা সম্ভব হয়, তাহলে তেমনভাবেই নামাজ আদায় করা যাবে, ইনশাআল্লাহ। এতে কোনো গোনাহ হবে না।
উল্লেখযোগ্য গ্রন্থসূত্র: আলবাহরুর রায়েক ২/১৩৭; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাল মারাকী, পৃষ্ঠা: ২৩৩