আসন্ন ঈদুল আজহায় প্রবাসে অবস্থানরত মুসলিমদের কোরবানি আদায়ের বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছে ইসলামিক চিন্তাবিদরা। প্রবাসীরা যেখানেই থাকুন না কেন, নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে তাদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব। তবে কোরবানি আদায়ের ক্ষেত্রে স্থান ও সময় সংক্রান্ত কিছু বিশেষ বিধিমালা রয়েছে, যা মেনে চলা আবশ্যক।
প্রবাসী ব্যক্তিরা চাইলে তারা যে দেশে অবস্থান করছেন, সেখানেই কোরবানি করতে পারবেন। তবে, যদি নিজ দেশে আত্মীয়দের মাধ্যমে কোরবানি দিতে চান, তবে সময়সীমা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোরবানির সময় নির্ধারণ হবে কোরবানিদাতা বর্তমানে যেই দেশে অবস্থান করছেন, সেই দেশের স্থানীয় সময় অনুযায়ী।
অর্থাৎ, জিলহজ মাসের ১০ তারিখ সুবহে সাদিকের পর প্রবাসীর ওপর কোরবানি ওয়াজিব হবে। যদি তার অবস্থানের দেশের সময় অনুযায়ী এই সময় পার হওয়ার আগেই নিজ দেশে কোরবানি সম্পন্ন হয়ে যায়, তবে তা আদায় হবে না।
বিশেষ সতর্কতা: যেসব দেশ সময়ের দিক থেকে বাংলাদেশের পেছনে রয়েছে, সেসব দেশের প্রবাসীদের জন্য এটি বিশেষভাবে প্রযোজ্য। তাদের অবশ্যই নিশ্চিত হতে হবে যে, তাদের নিজ দেশের সময় অনুযায়ী জিলহজ মাসের ১০ তারিখ সুবহে সাদিক অতিবাহিত হয়েছে, এরপরই যেন নিজ দেশে পশু জবাই করা হয়। (তথ্যসূত্র: বাদায়েউস সানায়ে : ৬/২৮৫, কিফায়াতুল মুফতি : ৮/১৮৬, ফাতাওয়ায়ে ফকীহুল মিল্লাত : ১১/২০৪)
কোরবানির সময়সীমা: সাধারণত, ঈদুল আজহার কোরবানি তিন দিন ধরে করা যায়। অর্থাৎ, জিলহজ মাসের ১০, ১১ ও ১২ তারিখ সূর্যাস্ত পর্যন্ত কোরবানি করার সুযোগ থাকে। তবে, ইসলামিক বিধান অনুযায়ী, জিলহজের ১০ তারিখে (বা প্রথম দিনে) কোরবানি করা উত্তম।
যেসব এলাকার মুসলিমদের ওপর জুমার নামাজ ও ঈদের নামাজ ওয়াজিব, তাদের জন্য ঈদের নামাজের আগে কোরবানি করা জায়েজ নয়। তবে, যদি বৃষ্টি বা অন্য কোনো অপারগতার কারণে প্রথম দিন ঈদের নামাজ আদায় করা সম্ভব না হয়, তাহলে ঈদের নামাজের সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পর প্রথম দিনেও কোরবানি করা জায়েজ। (তথ্যসূত্র: বুখারি : ২/৮৩২; ফাতাওয়া কাজিখান : ৩/৩৪৪; আদ্দুররুল মুখতার : ৬/৩১৮)
প্রবাসীদের উচিত, কোরবানির পূর্বে স্থানীয় আলেম বা নির্ভরযোগ্য ইসলামিক সংস্থার সঙ্গে পরামর্শ করে সঠিক নিয়ম জেনে নেওয়া। এতে করে তাদের কোরবানি সঠিক ও ত্রুটিমুক্তভাবে আদায় হবে।