যশোর জেনারেল হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছেন এইচআইভি (এইডস) আক্রান্ত এক নারী। চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ সতর্কতা ও মানবিক বিবেচনায় রবিবার সকাল ১০টায় শুরু হয়ে দুপুর ১২টার দিকে এই সিজারিয়ান অপারেশন সফলভাবে সম্পন্ন হয়।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, গাইনি বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. জেসমিন সুলতানার নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি চিকিৎসক দল এ অস্ত্রোপচারে অংশ নেন। বর্তমানে মা ও নবজাতক দুজনেই সুস্থ আছেন, তবে তাদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. হুসাইন শাফায়াত বলেন, “এইচআইভি আক্রান্ত রোগীর অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা প্রয়োজন। কয়েকদিন ধরে প্রস্তুতির পর আজ সফলভাবে অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে। এটি আমাদের হাসপাতালে এইচআইভি আক্রান্ত রোগীর দ্বিতীয় অস্ত্রোপচার।”
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, সংক্রমণ রোধে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা হিসেবে গাইনি অপারেশন থিয়েটার আগামী দুই দিন বন্ধ রাখা হবে। এর আগে, ২০১৯ সালে একই নারীর প্রথম সিজারিয়ান অপারেশনও এ হাসপাতালে সম্পন্ন হয়েছিল।
চিকিৎসা সূত্রে জানা গেছে, অন্তঃসত্ত্বার ছয় মাসে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় অস্ত্রোপচারের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়। এইচআইভি আক্রান্ত রোগীর জন্য হাসপাতালে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধার অভাব, সেইসঙ্গে অপারেশনের পর থিয়েটার বন্ধ রাখতে হওয়ায় অন্য বিভাগের চিকিৎসকদের সঙ্গে মতপার্থক্য দেখা দেয়।
তাকে বিশেষায়িত হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেওয়া হলেও আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে তা সম্ভব হয়নি। পরে মানবিক দিক বিবেচনায় যশোরেই অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ভুক্তভোগী নারীর পরিবারের সদস্যরা জানান, ২০১৮ সালে মনিরামপুর উপজেলার ওই নারীর অ্যাপেন্ডিসাইটিস ধরা পড়ে। পরবর্তীতে শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে অপারেশনের মাধ্যমে তিনি সুস্থ হন। এরপর থেকেই গোপনে এইচআইভি চিকিৎসা নিতে থাকেন। সেই চিকিৎসার মধ্যেই তিনি অন্তঃসত্ত্বা হন।