ভারতের উত্তরাখণ্ডে কেদারনাথ থেকে গুপ্তকাশীর পথে একটি যাত্রীবাহী হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন হেলিকপ্টারের পাইলটসহ ছয়জন তীর্থযাত্রী, যাদের একজন শিশু। দুর্ঘটনাটি ঘটে রোববার (১৫ জুন) ভোরে গৌরীকুণ্ড ও সোনপ্রয়াগের মাঝামাঝি একটি জঙ্গলে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, দুর্ঘটনাকবলিত হেলিকপ্টারটি ছিল আর্যন এভিয়েশন কোম্পানির মালিকানাধীন। এটি মাত্র ১০ মিনিটের দূরত্বে থাকা গুপ্তকাশীর দিকে যাচ্ছিল। স্থানীয় সময় ভোর ৫টা ২০ মিনিটে সেটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিচে পড়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তারা প্রথমে আকাশ থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখেন, এরপরই বিষয়টি উদ্ধারকারী বাহিনীকে জানানো হয়।
উত্তরাখণ্ড সিভিল এভিয়েশন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি জানায়, খারাপ আবহাওয়া ও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। SDRF, NDRF এবং স্থানীয় প্রশাসনের উদ্ধারকারী দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার তৎপরতা চালায়।
এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি। এক্স (পূর্বের টুইটার)-এ দেওয়া বার্তায় তিনি বলেন, “রুদ্রপ্রয়াগ জেলার এই দুর্ঘটনা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। উদ্ধারকারী বাহিনী কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। নিহতদের পরিবারকে সমবেদনা জানাচ্ছি।”
কেদারনাথ-গুপ্তকাশী রুটে এটি চলতি বছরের পঞ্চম হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা। এর আগে গত ৭ জুন আরেকটি হেলিকপ্টার জরুরি অবতরণ করতে গিয়ে একটি পার্ক করা গাড়ির ওপর আঘাত হানে। এমনকি, ২ মে হিমালয়ের গঙ্গোত্রী এলাকায় আরেকটি দুর্ঘটনায় ছয়জন প্রাণ হারান।
হিমালয়ের দুর্গম অঞ্চলে তীর্থযাত্রীদের জন্য হেলিকপ্টারই অন্যতম প্রধান যোগাযোগ মাধ্যম হলেও, একের পর এক দুর্ঘটনায় এসব পরিষেবার নিরাপত্তা নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, পর্যাপ্ত টেকনিক্যাল চেক ও আবহাওয়া পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে ফ্লাইট পরিচালনা না করলে ভবিষ্যতে আরও প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে।
এ ঘটনায় কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য প্রশাসন উভয়ই দুর্ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে এবং হেলিকপ্টার পরিষেবাগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যালোচনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
