বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি এবং বর্তমান জাতীয় সংসদের স্পিকার আবদুল হামিদ গত মধ্যরাতে হঠাৎ করেই দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। ৭ মে রাতে তাকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকার বাইরে চলে যেতে দেখা গেছে। যদিও তার বিদেশযাত্রার উদ্দেশ্য এখনো নিশ্চিত করা যায়নি, তবে এই সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং তার ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সমস্যার কারণে হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সূত্রের খবর
বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তার ঘনিষ্ঠ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে দেশের বাইরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাকে শেষবার বিমানবন্দরে দেখা গেছে, যখন তিনি অল্প কয়েকজন সঙ্গীসহ বিদেশি একটি ফ্লাইটে যাত্রা শুরু করেন। বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঘিরে বেশ কিছু অস্বাভাবিকতা ছিল, যার ফলে ঘটনাটি নিয়ে নানা ধরনের অনুমান ও আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে, আবদুল হামিদের বিদেশযাত্রা নিয়ে নানা রকম গুঞ্জন শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। অনেকেই মনে করছেন, তার এই পদক্ষেপ বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও বিশেষ করে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে তার সম্পর্কের সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে। কিছু সময় আগে তিনি যে রাজনৈতিক কার্যক্রম থেকে দূরে ছিলেন এবং বিভিন্ন বিষয়ে অবসর জীবন কাটাচ্ছিলেন, তার পরিপ্রেক্ষিতেই হয়তো এই বিদেশযাত্রা ঘটেছে।
এছাড়া, অন্যদিকে তার ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সমস্যাও এক কারণ হতে পারে। বিগত কিছুদিন ধরে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়া এবং চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়া নিয়ে তার পরিবারের পক্ষ থেকে কয়েকটি ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল। তবে, এখন পর্যন্ত তার বিদেশযাত্রার সুনির্দিষ্ট কারণ জানা যায়নি।
সরকার কি বলছে
এখন পর্যন্ত এই ঘটনার ব্যাপারে কোনো সরকারি ঘোষণা আসেনি। তবে এই সিদ্ধান্ত রাজনৈতিকভাবে চর্চিত এবং দেশের নেতৃবৃন্দের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি করেছে। সাবেক রাষ্ট্রপতির এই আকস্মিক বিদেশযাত্রা দেশবাসী এবং রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মধ্যে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, অনেকেই আশঙ্কা করছেন, আবদুল হামিদ দেশে ফিরবেন কি না তা এখনো অনিশ্চিত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক এই বিষয়ে বলেন, “সাবেক রাষ্ট্রপতির বিদেশযাত্রা সরকারের রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে একটি নতুন দিক তুলে ধরছে। এতে রাজনৈতিক অস্থিরতার সৃষ্টি হতে পারে এবং এই বিষয়ে যদি দ্রুত কোনো সরকারি বিবৃতি না আসে, তাহলে দেশের পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে।”
তবে, সাবেক রাষ্ট্রপতির বিদেশে অবস্থান নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য আসেনি। তিনি কি শিগগিরই দেশে ফিরবেন, না কি তার অবস্থান দীর্ঘদিনের জন্য বিদেশে থাকবে, এ বিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানা যায়নি।
মুখে কুলুপ পরিবারের
এদিকে, সাবেক রাষ্ট্রপতির পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছে, তারা এই বিষয়ে মন্তব্য করতে চাচ্ছেন না এবং তাদের প্রিয় সদস্যের স্বাস্থ্যজনিত ব্যাপারটি অনেকটা ব্যক্তিগত ইস্যু হিসেবে রেখে দেওয়ার অনুরোধ করেছেন।
তবে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আবদুল হামিদ একজন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত। তার এই বিদেশযাত্রা বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এটি সামগ্রিক পরিস্থিতির উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে।