গত তিন দিনের অবিরাম বর্ষণ এবং ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। এর ফলে সিলেট জেলায় বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। একই সময়ে মৌলভীবাজারে ভারী বর্ষণে পাহাড় ধসে সড়ক যোগাযোগ বিঘ্নিত হয়েছে।
রোববার (১ জুন) সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) প্রতিবেদন অনুযায়ী, সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭৯ সেন্টিমিটার এবং কুশিয়ারা নদীর পানি আমলশীদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যান্য নদ-নদীর পানিও কয়েকটি পয়েন্টে বিপৎসীমার কাছাকাছি চলে এসেছে।
সিলেট আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ৪০৪.৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা এই মৌসুমের সর্বোচ্চ। আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন জানান, রোববার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত আরও ১৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
পাউবোর প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, শনিবার সন্ধ্যায় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৯ সেন্টিমিটার নিচে থাকলেও, রোববার সকাল ৯টায় তা ৭৯ সেন্টিমিটার উপরে চলে আসে। একইভাবে, কুশিয়ারা নদীর পানি আমলশীদ পয়েন্টে শনিবার ১৮৭ সেন্টিমিটার নিচে থাকলেও, রোববার সকালে ৯৩ সেন্টিমিটার উপরে উঠে আসে।
তবে, সুরমা নদীর পানি সিলেট পয়েন্টে এখনো বিপৎসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার নিচে, কুশিয়ারা নদী বিয়ানীবাজারের শেওলা পয়েন্টে ৩৮ সেন্টিমিটার নিচে এবং ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ২৭ সেন্টিমিটার নিচে প্রবাহিত হচ্ছে।
টানা বৃষ্টিতে সিলেট নগরীর উপশহর, দক্ষিণ সুরমা এবং আরও কয়েকটি এলাকা এরই মধ্যে পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়াও, গোয়াইনঘাট, জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় সিলেট সিটি কর্পোরেশন একটি কন্ট্রোল রুম চালু করেছে। অন্যদিকে, জেলা প্রশাসন থেকে সকল উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের (ইউএনও) সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মৌলভীবাজারে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে, যা সড়ক যোগাযোগে বিঘ্ন সৃষ্টি করেছে।
সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকতে এবং যেকোনো প্রয়োজনে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।