পুঁজিবাজার নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার পাঁচ নির্দেশনা

New-Project-53.jpg
২৪ ঘণ্টা বাংলাদেশ

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস দেশের শেয়ারবাজারকে গতিশীল ও টেকসই করতে পাঁচটি কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন।

রোববার (১১ মে) সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় শেয়ারবাজার নিয়ে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠকে তিনি এসব নির্দেশনা দেন। এই বৈঠকটি অন্তবর্তী সরকারের অধীনে দায়িত্ব গ্রহণের পর শেয়ারবাজার বিষয়ে প্রথম গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গুরুত্বপূর্ণ একটি মিটিং হয়েছে। বিএসইসির চেয়ারম্যান রাশেদ মাকসুদ পুরো মিটিংয়ে ব্রিফিং করেন মার্কেটের অবস্থা নিয়ে। গত ৯ মাসে কী ধরনের রিফর্ম করা হয়েছে। কোথায় কোথায় এখনো রিফর্ম চলমান। সেগুলো নিয়ে উনি বিস্তারিত একটা পিকচার দেন এবং তার আলোকে খুবই প্রাণবন্ত আলোচনা হয়েছে। সেই আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা পাঁচটি প্রধান নির্দেশনা দিয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া ৫টি নির্দেশনা হলো:

সরকারি মালিকানাধীন বিদেশি/বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর শেয়ারবাজারে অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা: বাংলাদেশে কার্যক্রম চালানো, কিন্তু এখনও তালিকাভুক্ত না হওয়া যেসব বহুজাতিক কোম্পানিতে সরকারের অংশীদারিত্ব রয়েছে, তাদের দ্রুত পুঁজিবাজারে আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বেসরকারি বড় কোম্পানিকে প্রণোদনা দিয়ে বাজারে আনা: অর্থনৈতিকভাবে সম্ভাবনাময় ও সুপরিচিত বেসরকারি কোম্পানিগুলোকে প্রণোদনার মাধ্যমে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত করতে উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

বিদেশি বিশেষজ্ঞের সহায়তায় পুঁজিবাজার সংস্কার: একটি বিদেশি বিশেষজ্ঞ দল এনে তিন মাসের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করার পরিকল্পনা গ্রহণের কথা বলা হয়।

অনিয়মের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ: শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

বন্ড ও শেয়ারের মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহে উৎসাহ: বড় বড় কোম্পানিগুলো যাতে ব্যাংকঋণের পরিবর্তে শেয়ারবাজারের মাধ্যমে পুঁজি সংগ্রহ করে, সেজন্য প্রয়োজনীয় নীতিগত সহায়তা ও পরিবেশ তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এর মাধ্যমের যদি সম্পূর্ণ সংস্কার সম্ভব হয় তাহলে বাজারের গভীরতা বাড়বে। বড় কোম্পানি শেয়ারবাজারে এলে বাজারে লেনদেনের পরিমাণ ও মূলধন উভয়ই বাড়বে। বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি পাবে। বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর আর্থিক স্বচ্ছতা ও লাভজনকতা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করবে। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি পাবে। তালিকাভুক্ত কোম্পানিকে নিয়মিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হয়, যা সরকার এবং জনগণের কাছে তাদের কার্যক্রমের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে। সরকার রাজস্ব ও অংশীদারিত্ব থেকে উপকৃত হবে। সরকার তার শেয়ার ধরে রেখে আয় করতে পারবে, আবার কিছু শেয়ার বিক্রি করেও তাৎক্ষণিক অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়বে। আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন কোম্পানি শেয়ারবাজারে থাকলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও বাজারে প্রবেশে আগ্রহী হবেন।

Leave a Reply

scroll to top