বৈরী আবহাওয়ায় উত্তাল পদ্মা-মেঘনা

মজুচৌধুরী ঘাটে ৪ লাশবাহী গাড়ি নিয়ে ফেরি আটকা, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া অচল

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদী ভয়াল রূপ ধারণ করেছে। আজ বৃহস্পতিবার (২৯ মে) ভোররাত থেকে শুরু হয়েছে গুঁড়ি গুঁড়ি ও মাঝারি বৃষ্টি, যার ফলে নদী আরও উত্তাল হয়ে উঠেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে লক্ষ্মীপুর-ভোলা-বরিশাল রুটে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

নদী উত্তাল থাকায় ভোরে ভোলার উদ্দেশ্যে মজুচৌধুরীর হাট থেকে ছেড়ে যাওয়া দুটি ফেরি – বেগম সুফিয়া কামাল ও বেগম রোকেয়া – তীরে ফিরে আসার চেষ্টা করে। এর মধ্যে বেগম সুফিয়া কামাল কোনোমতে মজুচৌধুরীরহাট ঘাটে ভিড়তে সক্ষম হলেও, বেগম রোকেয়া ফেরিটি কমলনগর উপজেলার মতিরহাট এলাকায় আটকা পড়েছে।

সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, বেগম সুফিয়া কামাল ফেরিতে চারটি লাশবাহী গাড়ি রয়েছে, যা বর্তমানে মজুচৌধুরীরহাট ঘাটে আটকা।

ভোলা ফেরিঘাটের সহ-ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. আতিকুজ্জামান দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বর্তমানে নদীতে ভাটা থাকায় বেগম রোকেয়া ফেরিটি মতিরহাট এলাকায় আটকে আছে। জোয়ার এলেই ফেরিটি মজুচৌধুরীরহাট ঘাটে ফিরবে। তিনি আরও জানান, লক্ষ্মীপুর-ভোলা রুটে চলাচলকারী পাঁচটি ফেরির মধ্যে বেগম রোকেয়া ছাড়া বাকি চারটি বর্তমানে মজুচৌধুরীরহাট ঘাটে অবস্থান করছে, কারণ ইলিশা ফেরিঘাটে এই মুহূর্তে ফেরি রাখার সুযোগ নেই।

দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ

বৈরী আবহাওয়ার কারণে পদ্মা নদী উত্তাল থাকায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকাল ৯টা থেকে দুর্ঘটনা এড়াতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঘাট কর্তৃপক্ষ। তবে, এই রুটে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিন সকাল থেকে রাজবাড়ীর বিভিন্ন স্থানে শুরু হয় ঝড়ো হাওয়া ও হালকা বৃষ্টি, যা পদ্মা নদীকে উত্তাল করে তোলে। এমতাবস্থায়, যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং যেকোনো ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটের লঞ্চ চলাচল সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে।

দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটের ম্যানেজার নুরুল আনোয়ার মিলন নিশ্চিত করেছেন, “বাতাসের সঙ্গে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় সকাল ৯টা থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পুনরায় লঞ্চ চলাচল শুরু হবে।” তিনি আরও জানান, বর্তমানে নদী কিছুটা উত্তাল রয়েছে।

অন্যদিকে, বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাটের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন জানিয়েছেন, নদীতে কিছুটা বাতাস থাকলেও ফেরি চলাচলে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। বর্তমানে এই রুটে ১২টি ফেরি দিয়ে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে এবং দৌলতদিয়া প্রান্তে যানবাহনের কোনো সারি নেই।

যাত্রীদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে, লঞ্চ চলাচল শুরু হওয়ার আগে ঘাট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে সর্বশেষ তথ্য জেনে যাত্রা শুরু করতে।

Leave a Reply

scroll to top