দেশের বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা নিরসনে বিরোধী দলগুলোর মধ্যে ঐক্য জোরদারের লক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার (২২ মে) রাতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করিম (পীর সাহেব চরমোনাই)-এর আহ্বানে ফ্যাসিবাদবিরোধী পাঁচটি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জানা গেছে, রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর, ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, এবি পার্টির মহাসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দিন আহমদ।
এছাড়া, এতে আরও উপস্থিত ছিলেন- এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদিব, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, মুফতি সৈয়দ এসহাক মুহাম্মদ আবুল খায়ের, আহমদ আবদুল কাইয়ুম, এবি পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ লোকমান, এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন, গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবু হানিফসহ সংশ্লিষ্ট দলগুলোর শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।
বৈঠকে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ করণীয় নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়। নেতারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সংস্কার শেষে একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং এতে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছান।
এসময় উপস্থিত নেতৃবৃন্দ যে কোনো মূল্যে ফ্যাসিবাদবিরোধী সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ রাখার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়। এছাড়া, দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষার পাশাপাশি ভবিষ্যতে রাষ্ট্র গঠনে ঘনিষ্ঠভাবে ঐক্যবদ্ধ কৌশল গ্রহণের বিষয়ে বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
উক্ত বৈঠকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. মোহাম্মদ শফিকুর রহমান বৈঠকে মুঠোফোনে যুক্ত হয়ে নিজ দলীয় সমর্থন জানান এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্যে একাত্মতা প্রকাশ করেন।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পাঁচ দলের ঐক্য বর্তমান সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টিতে সহায়ক হতে পারে এবং দেশের রাজনীতিতে নতুন গতি আনতে পারে। তবে, এই ঐক্য কতদূর সফল হবে, তা আগামী দিনের কর্মসূচির ওপর নির্ভর করবে।