চাকরিটা যেন সোনার হরিণ, প্রক্সি পরীক্ষায় তহশিলদার!

এক বাশারের কত সম্পদ!

এক বাশারের কত সম্পদ! প্রকাশ্যে এলো সম্পদের বিশদ তথ্য মঠবাড়িয়া উপজেলার , টিকিকাটা ইউনিয়ন ভূমি অফিস পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানি থানার পাড়ের হাট গ্রাম

এক বাশারের কত সম্পদ! প্রকাশ্যে এলো সম্পদের বিশদ তথ্য

মুহাম্মাদ নূরে আলম খান শান্ত, ঢাকা

অনুসন্ধান–০১

২০০৩ সালের ক্যালেন্ডারে চোখ রাখলেই দেখা মেলে একটি বিতর্কিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির। ওই বছর প্রকাশিত তহশিলদার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির পেছনে যে কাহিনি লুকিয়ে ছিল, তা আজ এলাকাজুড়ে মুখে মুখে।
২৪ ঘণ্টা বাংলাদেশের দীর্ঘ অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য।

পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানী উপজেলার পাড়েরহাট গ্রামের বাসিন্দা আবুল বাশার আজাদ ওরফে মাছুম তহশিলদার। অভিযোগ উঠেছে, তিনি ওই নিয়োগ পরীক্ষায় প্রক্সি বা ভাড়াটে পরীক্ষার্থী দিয়ে লিখিত অংশে পাশ করেন। অভিযোগ অনুসারে, তার মেজো ভাইয়ের সহকর্মী সনাতন বাবুকে মোটা অঙ্কের অর্থে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়ে লিখিত পরীক্ষা দেন মাছুম তহশিলদারের হয়ে। ফলাফল–লিখিত পরীক্ষায় পাশ, এরপর ভাইভা ও চাকরি। এই নিয়ে তোলপাড় পুরো ইন্দুরকানী।

পারিবারিক পরিচিতি

তিন ভাইয়ের মধ্যে মাছুম তহশিলদার সর্বকনিষ্ঠ। বড় ভাই মাওলানা আবুল কালাম গাজীপুর নেছারিয়া সিনিয়র মাদ্রাসার হোস্টেল সুপার। মেঝ ভাই আব্দুস সালাম ঢাকার কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ কামুচাদ উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত।

শিক্ষা জীবন

মাছুম তহশিলদারের ছাত্রজীবন মোটেও উজ্জ্বল ছিল না। অবজেকটিভ ও টিক মার্ক যুগে এসএসসি, এইচএসসি ও বি.এ পর্যন্ত কয়েক দফা ফেল করার পর কোনো রকমে বি.এ পাস করেন। পাড়েরহাট রাজলক্ষ্মী উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র থাকাকালে তার উল্লেখযোগ্য কোনো একাডেমিক অর্জন নেই।

পৈত্রিক আর্থিক অবস্থা

মাছুম তহশিলদারের দাদা ছিলেন দিনমজুর, যিনি নিজের জন্য একটি ঘর তুলতেও জমি পাননি। তার মা আমেনা বেগমের ভিটেমাটি থেকে মাত্র ৩৫ শতাংশ জমি ভাগে পেয়ে শুরু হয় সংসারের পথচলা। বাবা জীবিকা নির্বাহ করতেন অন্যের জমি বর্গা চাষ করে। জীবনের শুরুটা ছিল কঠিন ও সংগ্রামের।

বর্তমানে কী কী সম্পদ আছে তার?

অনুসন্ধানে জানা গেছে, মাছুম তহশিলদারের নামে–বেনামে রয়েছে বিপুল পরিমাণ সম্পদ। যার মধ্যে রয়েছে:
পিরোজপুরের ইন্দুরকানী থানার উমেদপুরের পাড়েরহাট গ্রামে ৫২ শতাংশ জমি। যার বর্তমান বাজার মূল্য ৮,০০,০০০ টাকা। পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানী এলাকার বিশ্বরোড সংলগ্ন ২২ শতাংশ জমি। যার বাজার মূল্য ২০,০০,০০০ টাকা । নিজের বসবাড়ির সামনে ১০,০০,০০০ টাকা মূল্যমান রয়েছে ৪২ শতাংশ জমি। এছাড়াও রয়েছে নামে বেনামে কোটি টাকার সম্পদ।

চাকরিটাই যেন সোনার হরিণ। এ প্রবাদ বাক্যটি সত্যতায় রূপ দিলেন সুচতুর এই তহশিলদার। এ যেন ধরাকে সারা ঞ্জান করা মতে অবস্থা। এ যেন চাকরির আড়ালে স্বর্ণখনি আবিষ্কারের গল্প!
বক্তব্য জানতে চাইলে…

মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে মাছুম তহশিলদার “২৪ ঘণ্টা বাংলাদেশ“-কে বলেন, “ভাই, আমি এসব বিষয়ে কথা বলতে রাজি না। আমার সামনে মানুষ। পরে কথা বলব।”

Leave a Reply

scroll to top