কুরবানির বর্জ্য ও জমে থাকা পানি এডিস মশার প্রজননের ঝুঁকি বাড়াতে পারে

কুরবানির রক্ত ধোয়ার পানিতেও ডেঙ্গুর ঝুঁকি

ঈদুল আজহায় কুরবানির বর্জ্যে ডেঙ্গুর ঝুঁকি ও মশা নিধনের উদ্যোগ
মুহাম্মদ নূরে আলম

বাংলাদেশে এ বছর সরকারি হিসাবে ঈদুল আজহায় এক কোটির বেশি পশু কুরবানি হতে পারে। এত বিপুল সংখ্যক গরু-ছাগল কুরবানি এবং তা পরিষ্কারের জন্য প্রচুর পানির ব্যবহার হবে। এতে করে কি এডিস মশার প্রজনন বাড়তে পারে? ফলে কি ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে?

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. মেহেরজাদী সাবরিনা ফ্লোরা বলেন, কুরবানির পর ব্যবহৃত পানি যদি কোথাও জমে থাকে, তবে তা উদ্বেগের কারণ হতে পারে। তিনি জানান, “যদি ধোয়ার পানি ড্রেনেজ সিস্টেমে চলে যায়, তবে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু জমে থাকলে এডিস মশার প্রজননের আশঙ্কা থাকে। তাই আমরা বারবার বলছি, কোথাও যেন পানি জমে না থাকে। জমা পানিতে মশার বংশবৃদ্ধি হতে পারে।”

এবারের ঈদুল আজহার উৎসব এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুজ্বরের প্রকোপে কিছুটা ম্লান হতে পারে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১৪ জন নতুন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

রাজধানীর ভাটারা এলাকার বাসিন্দা আক্তার জাহান, একটি আবাসিক ফ্ল্যাট মালিক সমিতির সদস্য, বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে তারা কুরবানির সময় বর্জ্য অপসারণে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করছেন। তবে, নগরবাসীর সবাই এই দায়িত্ব কতটা পালন করবেন, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন বর্জ্য পরিষ্কারে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ মমিনুর রহমান বলেন, “পশুর হাট থেকে শুরু করে আমরা মশা নিধনের কার্যক্রম জোরদার করেছি। হাটে পানির পাত্র বা গরুর খাবারের পাত্রে মশার প্রজনন রোধে আমরা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি মশক নিধন কার্যক্রম চালাচ্ছি।”

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমোডোর মোঃ জাহিদ হোসেন বলেন, “নির্ধারিত স্থানে পশু জবাই করুন, যত্রতত্র নয়। গোবর বা বর্জ্য ড্রেনে ফেলবেন না। জবাইয়ের পর বর্জ্য ব্যাগে ভরে ডাস্টবিনে ফেলুন। পাকা স্থানে জবাই করলে রক্ত ডেটল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। আমরা পরে ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে দেব।”

ঈদের ছুটিতে যারা বাড়ি ছাড়বেন, তাদের জন্য তাজনিয়া ইসলাম ইশা’র পরামর্শ,

“তালাবন্ধ করার আগে নিশ্চিত করুন কোথাও পানি জমে নেই। কমোড বা টয়লেটের প্যানে জীবাণুনাশক বা কেরোসিন ছিটিয়ে দিন। বালতি বা পাত্র উপুড় করে রাখুন, যাতে মশা ডিম পাড়তে না পারে।”

মুহাম্মদ নূরে আলম

মুহাম্মদ নূরে আলম

মুহাম্মদ নূরে আলম (Muhammad Noora Alam) একজন অভিজ্ঞ সাংবাদিক ও কনটেন্ট বিশেষজ্ঞ, যিনি পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রিন্ট, অনলাইন এবং ডিজিটাল মিডিয়ায় কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি ঢাকা পোস্ট, নয়াদিগন্ত, বিজনেস মিরর এবং শিরোনাম মিডিয়ার মতো প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমে সাব-এডিটর ও কনটেন্ট ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি এনভিডিয়া ও দুবাই ওয়ান মিলিয়ন প্রমপ্টার্স থেকে জেনারেটিভ এআই ও প্রমপ্ট ইঞ্জিনিয়ারিং-এর সনদপ্রাপ্ত। আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে পাঠকবান্ধব, প্রাসঙ্গিক ও মনস্তাত্ত্বিকভাবে প্রভাব ফেলতে সক্ষম কনটেন্ট তৈরিতে তার দক্ষতা অনন্য। ব্যবসা, প্রযুক্তি, সমাজ ও সমসাময়িক বিষয়ের উপর লেখালেখিতে তার পারদর্শিতা রয়েছে। পাশাপাশি তিনি ‘স্বপ্নবাজ ফাউন্ডেশন’-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং ‘রেঁনেসা ফাউন্ডেশন’-এর মিডিয়া প্রধান হিসেবে কাজ করছেন।

Leave a Reply

scroll to top