সিরাজগঞ্জে আগাম নদীভাঙন, বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি

New-Project-22-8.jpg

আগাম নদীভাঙন

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

বর্ষা মৌসুম এখনো শুরু হয়নি, তার আগেই তীব্র হয়ে উঠেছে যমুনা নদীর ভাঙন। সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ভাটপিয়ারীসহ আশপাশের গ্রামগুলোতে গত তিন সপ্তাহ ধরে টানা নদীভাঙনে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। ইতোমধ্যে বিঘার পর বিঘা ফসলি জমি, সড়ক, গাছপালা ও বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদীর ভয়াল আগ্রাসন এখন ঘরবাড়ির দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে, আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন নদীপাড়ের সহস্রাধিক পরিবার।

স্থানীয়দের অভিযোগ, যমুনার পূর্বপাড়ে নতুন চর জেগে ওঠায় নদীর প্রবাহ এখন পশ্চিম পাড়ে সজোরে আঘাত হানছে। এতে প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ব্যাপক ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃক ফেলা জিও ব্যাগও তীব্র স্রোতের মুখে কার্যকর হচ্ছে না বলে দাবি এলাকাবাসীর।

পাউবো সূত্র জানায়, গত ১৬ থেকে ২৩ মে—এই এক সপ্তাহে যমুনার পানি ১৫০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বেড়েছে। যদিও এখনো সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টে নদীর পানি বিপদসীমার ৩০৬ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে, তবে নদীতীরবর্তী অঞ্চলে ভাঙনের গতি শ্লথ হয়নি। গত সাত দিনে শতাধিক বিঘা আবাদি জমি, গ্রামীণ রাস্তাঘাট ও বসতঘর নদীগর্ভে চলে গেছে।

ভাটপিয়ারী গ্রামের সমাজসেবক শেখ মো. এনামুল হক বলেন, “প্রতিবছরই বর্ষার সময় নদীভাঙনে মানুষ ঘরছাড়া হয়, কিন্তু এবার তো বর্ষার আগেই ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। মানুষ এখনই ঘরছাড়া হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই ভাঙন ঠেকাতে এখনই জরুরি ব্যবস্থা দরকার।”

স্থানীয়রা জানান, ভাঙনের ভয় এতটাই প্রকট হয়ে উঠেছে যে অনেক পরিবার ইতোমধ্যে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিতে শুরু করেছে। ফসলি জমি হারিয়ে চরম অর্থনৈতিক দুরবস্থায় পড়েছেন কৃষকরা।

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোখলেছুর রহমান জানান, “আমরা ইতোমধ্যে ভাঙনপ্রবণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করেছি এবং জরুরি ভিত্তিতে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো দ্রুত পরিদর্শন করে দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ভাঙন ঠেকাতে যথাযথ উদ্যোগ না নিলে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার নিতে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের। সরকারি সহায়তা এবং টেকসই প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছে এলাকাবাসী।

Leave a Reply

scroll to top