ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হিজাব ও নিকাব পরিধানকারী নারী শিক্ষার্থীদের পরিচয় নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে ধর্মীয় অনুভূতি ও ব্যক্তিগত গোপনীয়তার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. কামরুল আলম স্বাক্ষরিত সাম্প্রতিক এক বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, “ঢাকা মেডিকেল কলেজের অনেক নারী শিক্ষার্থী ধর্মীয় অনুশাসন মেনে হিজাব অথবা নিকাব পরে ক্লাস ও পেশাগত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। এ অবস্থায় তাদের পরিচয় শনাক্তের প্রয়োজন হলে, তা যেন শুধু নারী শিক্ষকের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়—এই মর্মে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।”
এই সিদ্ধান্তকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় বিশ্বাস, ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ও নিরাপত্তার মধ্যে একটি ভারসাম্য রক্ষার ইতিবাচক দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে। ঢামেক এমন একটি নীতি গ্রহণ করেছে, যেখানে শিক্ষার্থীদের অধিকার ও মর্যাদা সংরক্ষণে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদক্ষেপের অনুসরণ
এর আগে ২০২৪ সালের ৬ মার্চ অনুষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমিটির সভায় অনুরূপ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নিকাব পরিহিত ছাত্রীদের পরিচয় যাচাইয়ের কাজ শুধু নারী শিক্ষক, কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের মাধ্যমে সম্পন্ন করার কথা বলা হয়।
বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের উদ্যোগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নারীদের অংশগ্রহণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি ধর্মীয় সহনশীলতাকেও দৃঢ়তর করে।
ড. শারমিন আক্তার, সহযোগী অধ্যাপক, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়:
“ঢাকা মেডিকেল কলেজের এই পদক্ষেপ সময়োপযোগী ও দায়িত্বশীল। এটি ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি সম্মান প্রদর্শনের পাশাপাশি নারী শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করে। নারী শিক্ষক দ্বারা পরিচয় যাচাইয়ের বিধান প্রতিষ্ঠানিকভাবে ধর্মীয় সহনশীলতা ও ব্যক্তি স্বাধীনতার একটি সুন্দর সমন্বয়। এর মাধ্যমে নারীরা আরও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে উচ্চশিক্ষা ও পেশাগত জীবনে এগিয়ে যেতে পারবেন।”