বাংলাদেশের লালমনিরহাট বিমানবন্দর পুনরায় সচল করার পরিকল্পনা নিয়ে ভারতে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, চীনের সহযোগিতায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার এই বিমানবন্দরটি পুনরায় চালু করতে চায় বাংলাদেশ। এর পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে ভারত ত্রিপুরার কৈলাশহরে তিন দশক পুরোনো বিমানঘাঁটি সচল করার পরিকল্পনা করছে।
গত সোমবার (২৬ মে) সেনাসদরে এক ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশনস অধিদপ্তরের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম-উদ-দৌলা জানান, দীর্ঘদিন অব্যবহৃত লালমনিরহাট বিমানবন্দরটি প্রয়োজনের ভিত্তিতে সচল করা হচ্ছে। তিনি স্পষ্ট করেন, চীনা কোনো সংস্থা এই বিমানবন্দর ব্যবহার করবে কি না, সে বিষয়ে তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। তবে এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের সহযোগিতায় এটি সচল করার পরিকল্পনা রয়েছে, যা ভারতের জন্য উদ্বেগের কারণ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, লালমনিরহাট বিমানবন্দর ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এটি ভারতের ‘চিকেন নেক’ নামে পরিচিত কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ এলাকা থেকেও সমান দূরত্বে। এই এলাকা দিয়ে ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সেভেন সিস্টার্স রাজ্যে পণ্য পরিবহন করা হয়। ভারতের আশঙ্কা, এই বিমানবন্দরে চীনের সামরিক উপস্থিতি থাকতে পারে, যার মধ্যে যুদ্ধবিমান, রাডার, এবং নজরদারি সরঞ্জাম অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।
এই পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে ভারত ত্রিপুরার কৈলাশহর বিমানঘাঁটি পুনরায় সচল করার পরিকল্পনা করছে। এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ২৬ মে একটি ভারতীয় প্রতিনিধি দল কৈলাশহর বিমানঘাঁটি পরিদর্শন করেছে। তারা জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে বেসামরিক কাজে এটি ব্যবহৃত হলেও অবকাঠামো উন্নত করা হবে, যাতে যুদ্ধবিমান ও সাধারণ বিমান ওঠানামা করতে পারে এবং যুদ্ধকালীন জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা যায়।
এনডিটিভি আরও দাবি করেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের একজন ‘মূল্যবান মিত্র’ ছিলেন, যিনি উত্তর-পূর্বাঞ্চলে চীনের প্রভাব রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তবে ছাত্র আন্দোলনের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার ভারতের প্রতি ‘কম বন্ধুত্বপূর্ণ’ এবং চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের পক্ষে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
ভারতীয় সীমান্তের কাছাকাছি লালমনিরহাট বিমানবন্দর সচল হওয়ার সম্ভাবনা ভারতের জন্য কৌশলগত উদ্বেগ তৈরি করেছে। তবে বাংলাদেশ সরকার এখনো এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি প্রকাশ করেনি।
সূত্র: এনডিটিভি
- এমএনএ