চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শহীদ মো. ফরহাদ হোসেন হল এবং অতীশ দীপঙ্কর হলে সিট বরাদ্দপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের আসন স্থগিত করায় চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক জটিলতার কারণে সিট নিশ্চিত হয়েও হলে উঠতে পারছেন না শতাধিক শিক্ষার্থী। ফলে বিষয়টির দ্রুত সমাধান না হলে বুধবার (২২ মে) বিকেল ৫টার মধ্যে হলে উঠার আল্টিমেটাম দিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) সকাল ১১টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। তারা জানান, আবেদন প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বৈধভাবে সিট পাওয়ার পরও “ইয়ার সংক্রান্ত জটিলতা” দেখিয়ে তাদের সিট স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। যদিও সিট প্রাপ্তির তালিকায় নাম ছিল এবং অনেকে ইতোমধ্যে হলে উঠেছেন।
সিট নিশ্চিত হলেও স্থগিত বরাদ্দ
শহীদ মো. ফরহাদ হোসেন হলে মোট ৭০০ সিটের মধ্যে ৫৩০টি সিট নিশ্চিত করা হলেও বাকি ২০০ শিক্ষার্থীর বরাদ্দ স্থগিত রাখা হয়েছে। অতীশ দীপঙ্কর হলে একইভাবে প্রায় ৩০ জন শিক্ষার্থী অনিশ্চয়তায় রয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ
ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, “ফরম পূরণ থেকে শুরু করে ভাইভা পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে আমরা নিয়ম মেনেই অংশ নিয়েছি। এরপর হঠাৎ করে বলা হচ্ছে, বর্ষ নিয়ে সমস্যা আছে। অথচ সমস্যার দায় আমাদের নয়। প্রভোস্ট, আইসিটি সেল, প্রক্টর অফিস—সব জায়গায় ঘুরছি, কেউ সমাধানের সুনির্দিষ্ট সময় দিতে পারছে না।”
২১-২২ শিক্ষাবর্ষের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী আলমগীর হোসেন বলেন, “দেড় মাস ধরে আমরা এ নিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছি। সমাবর্তনের পর হলে উঠানোর আশ্বাস মিললেও এখন প্রশাসনের নীরবতা আমাদের দিশেহারা করে তুলেছে।”
সমাধানে লাগতে পারে ৬ মাসও
আইসিটি সেল পরিচালক অধ্যাপক ড. সাইদুর রহমান চৌধুরী বলেন, “হলের সিট ইস্যুটি এখন আমাদের অগ্রাধিকার নয়। ভর্তি কার্যক্রম চলমান থাকায় আপাতত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া সম্ভব নয়। এটি সমাধানে একমাস কিংবা ছয় মাসও লাগতে পারে।”
তবে কেন্দ্রীয় আসন বরাদ্দ কমিটির আহ্বায়ক ও উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “ইয়ার সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান প্রক্রিয়াধীন। শিক্ষার্থীরা যদি নিজেরাই হলে উঠে পড়ে, তার দায় তাদেরকেই নিতে হবে। আমরা চেষ্টা করছি ঈদের আগেই সমাধান করতে।”
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, বিকেল ৫টার মধ্যে কোনো সমাধান না এলে তারা বরাদ্দপ্রাপ্ত হলে প্রবেশ করবেন এবং নিজ উদ্যোগে হলে উঠবেন।