বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ আজ বৃহস্পতিবার (২৯ মে) আরও ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হওয়ায় কক্সবাজারসহ উপকূলীয় অঞ্চলে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গত তিন দিন ধরে টানা গুঁড়ি গুঁড়ি থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত এবং সাগরের তীব্র ঢেউয়ের কারণে উপকূলজুড়ে দেখা দিয়েছে দুর্ভোগ। বিশেষ করে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় সেখানকার বাসিন্দারা তীব্র খাদ্য সংকটের মুখে পড়েছেন।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, এদিন দুপুর ১২টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় জেলাটিতে সর্বোচ্চ ৯২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী দুই দিনও এমন বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করতে পারে। নিম্নচাপের প্রভাবে সাগর প্রচণ্ড উত্তাল থাকায় কক্সবাজারসহ দেশের চারটি সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি সাগরে অবস্থানরত সকল প্রকার নৌযানকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের বিচকর্মীরা কক্সবাজার সৈকতে লাল পতাকা উত্তোলন করে পর্যটকদের সতর্ক করছেন। সহকারী সুপারভাইজার বেলাল হোসেন জানিয়েছেন, মাইকিং করে পর্যটকদের সমুদ্রে গোসল করা থেকে বিরত থাকতে বলা হচ্ছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে কাজে বের হতে গিয়ে সাধারণ মানুষ ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
এদিকে, টানা চার দিন ধরে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের সঙ্গে টেকনাফের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন সমুদ্রপথের সার্ভিস ট্রলার সমিতির সভাপতি রশিদ আহমদ নিশ্চিত করেছেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে পণ্যবাহী ট্রলারসহ সব ধরনের নৌ চলাচল বন্ধ রয়েছে।
সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফয়েজুল ইসলাম জানিয়েছেন, যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতার কারণে দ্বীপে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। কাঁচাবাজার প্রায় ফুরিয়ে এসেছে এবং অন্যান্য ভোগ্যপণ্যও দ্রুত শেষ হয়ে আসছে। বাজারে যা কিছু অবশিষ্ট আছে, তার দামও আকাশচুম্বী। এই পরিস্থিতিতে দ্বীপের বাসিন্দারা চরম অসহায়ত্বের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন জানিয়েছেন, আবহাওয়া অধিদপ্তর ৩ নম্বর সতর্কসংকেত জারি করায় এবং সাগর উত্তাল থাকায় সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত নৌ চলাচল বন্ধ থাকবে।
তিনি আরও বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে দ্রুত নৌযান চলাচল শুরু হবে এবং দ্বীপের সংকট নিরসনে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।