রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের এলাকায় বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সকাল থেকে মেঘলা আকাশ দেখা গেলেও বৃষ্টির দেখা মেলেনি। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ পূর্বাভাস অনুযায়ী, আজ দিনের বাকি সময়জুড়ে আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকবে এবং দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার বুলেটিনে বলা হয়েছে, আকাশ আংশিক মেঘলা থেকে অস্থায়ীভাবে মেঘলা থাকতে পারে। বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকায় গরমের অস্বস্তি থেকে মুক্তি মিলবে না। আজ সকাল ৬টায় ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ২৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৮৭ শতাংশ। গতকাল (বুধবার) ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা আজ কিছুটা কমে ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় কোনো বৃষ্টিপাত হয়নি। ফলে দীর্ঘ সময় ধরে চলমান উচ্চ আর্দ্রতার কারণে শহরজুড়ে ভ্যাপসা গরমে নাগরিকদের ভোগান্তি বাড়ছে। বিশেষ করে রাস্তায় চলাচল করা মানুষ এবং নির্মাণ শ্রমিকদের জন্য পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে উঠেছে।
অন্যদিকে, দেশের অন্যান্য অঞ্চলে বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা ও খুলনা বিভাগের দু-একটি স্থানে অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণও হতে পারে। সেইসঙ্গে সারাদেশের দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর আরও জানিয়েছে, দেশে এখনো বর্ষা মৌসুম পুরোপুরি শুরু হয়নি। দক্ষিণাঞ্চলের কিছু এলাকায় মৌসুমি বায়ুর প্রভাব দেখা দিলেও রাজধানীসহ দেশের বেশিরভাগ অংশে তা এখনও সক্রিয় হয়নি। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, বর্ষা মৌসুম শুরু হতে আরও কয়েকদিন সময় লাগতে পারে।
এদিকে, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, বাগেরহাট, যশোর, কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গাসহ রংপুর ও রাজশাহী অঞ্চলে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, যা কিছু কিছু এলাকায় প্রশমিত হতে পারে। এসব অঞ্চলের মানুষজন দীর্ঘ সময় ধরে অতিরিক্ত গরমের সঙ্গে লড়ছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মৌসুমি বৃষ্টিপাত বিলম্বিত হওয়ায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কৃষি ও জনস্বাস্থ্যে প্রভাব পড়তে পারে। তারা নাগরিকদের গরমে স্বস্তির জন্য হালকা কাপড় পরা, পর্যাপ্ত পানি পান এবং জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রোদে বাইরে না বের হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
ঢাকার জলবায়ু প্রবণতা অনুযায়ী, জুন মাসের মাঝামাঝিতে বর্ষা পুরোপুরি সক্রিয় হয় এবং মাসজুড়ে গড়ে ১৫ দিনের মতো বৃষ্টিপাত হয়। তবে এখনো বৃষ্টির কোনো স্থায়ী আশ্বাস না থাকায় ভ্যাপসা গরমের সঙ্গে সহনশীলতা বজায় রাখাই আপাতত একমাত্র উপায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।