মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখানে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের নিমতলায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি অ্যাম্বুলেন্সকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয় যাত্রীবাহী একটি বাস। ভয়াবহ এ দুর্ঘটনায় একই পরিবারের চারজন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৮ মে) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসাড়া হাইওয়ে থানার ওসি আব্দুল কাদের জিলানী।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অ্যাম্বুলেন্সটি ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের ঢাকাগামী লেনে নিমতলা তালুকদার পাম্পের সামনে চাকা পাংচার হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। এ সময় পেছন থেকে আসা গোল্ডেন লাইন পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস সজোরে অ্যাম্বুলেন্সটিকে ধাক্কা দেয়। এতে অ্যাম্বুলেন্সে থাকা যাত্রীরা ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন।
ঘটনাস্থলেই মারা যান ৩৫ বছর বয়সী এক নারী। আহত অবস্থায় ছয়জনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সামাদ ফকির (৬০), তার ছেলে হাফেজ বিল্লাল (৪০) এবং মেয়ে আফসানা (২০)। আহতদের মধ্যে আরও দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
মূল ঘটনা
আহতরা জানান, তাদের বাড়ি মাদারীপুরের সদর উপজেলার মিঠাপুকুর এলাকায়। বিল্লাল ফকিরের স্ত্রী রোজিনা বেগম (৩০) অন্তঃসত্ত্বা। চলতি মাসের ২৩ তারিখ তার বাচ্চা প্রসবের সম্ভাব্য তারিখ। তবে গতরাত থেকে তার ব্যথা হচ্ছিল। এজন্য সকালে একটি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে তাতে পরিবারটির ১০ জন মিলে ঢাকার পথে আসছিলেন। ঢাকার ধানমন্ডি এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার কথা ছিল।
অ্যাম্বুলেন্সে করে রওনা দেয়ার পর এক্সপ্রেসওয়ের নীমতলি এলাকায় আসার পর সেটির চাকা ব্লাস্ট হয়ে যায়। এরপর রাস্তার ডান পাশে চাপিয়ে সেটির চাকা মেরামত করছিলেন এর চালক। আর তারা কয়েকজন অ্যাম্বুলেন্সের ভেতরে বসে ছিলেন, আর কয়েকজন পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন। মেরামত প্রায় শেষের দিকে গোল্ডেন লাইন পরিবহনের একটি বাস পেছন থেকে এসে সজোরে অ্যাম্বুলেন্সে ধাক্কা দেয়।
এদিকে হাসাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী জানান, মাওয়ার নীমতলি এলাকায় একটি অ্যাম্বুলেন্সে বাস ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলে একজন মারা যান। আর আহতদের ঢাকা মেডিকেল পাঠান হয়েছে। ঢাকা মেডিকেলে কেউ মারা গেছে কিনা সেটি তার জানা নেই। তবে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। ঘটনাস্থলে যেই নারী নিহত হয়েছেন তার লাশ পুলিশ হেফাজতে আছে। বাস, অ্যাম্বুলেন্স দুটিই জব্দ করা হয়েছে।
এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে এবং সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে আবারও প্রশ্ন উঠেছে।