আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী কিংবদন্তির লুইস গালভান আর নেই

Luis Galván Luis Galvan

লুইস গালভান

২৪ ঘণ্টা বাংলাদেশ

আর্জেন্টিনার ১৯৭৮ সালের বিশ্বকাপজয়ী দলের অন্যতম নির্ভরযোগ্য ডিফেন্ডার লুইস আদোলফো গালভান আর নেই। নিউমোনিয়া ও কিডনি জটিলতায় ভুগে ২০২৫ সালের ৫ মে, সোমবার আর্জেন্টিনার কোর্দোবা শহরের রেইনা ফাবিওলা হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। গালভানের মৃত্যুতে ফুটবলবিশ্ব হারাল এক নীরব কিন্তু দৃঢ় প্রতিরক্ষাকর্মীকে—যিনি গ্ল্যামার ছাড়াও ছিলেন মাঠে অপরিহার্য, সাহসী এবং বিশ্বস্ত এক রক্ষাকবচ।

১৯৭৮ বিশ্বকাপজয়ী দলের মূল স্তম্ভ

লুইস গালভান ছিলেন আর্জেন্টিনার ১৯৭৮ সালের সেই ঐতিহাসিক বিশ্বকাপজয়ী দলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যারা ঘরের মাঠে প্রথমবারের মতো শিরোপা জিতে নেয়। ডিফেন্স লাইনে ড্যানিয়েল পাসারেলার সঙ্গে তার জুটি প্রতিপক্ষের আক্রমণভাগ ভেঙে দেওয়ার ক্ষেত্রে ছিল দুর্ভেদ্য। প্রতিটি ম্যাচে ফুটবল বিশ্লেষকদের দৃষ্টি কেড়েছিলেন তিনি। অহংকারহীন, নির্ভুল ট্যাকল ও সঠিক পজিশনিংই ছিল তার সবচেয়ে বড় শক্তি।

ক্লাব ক্যারিয়ারে তালেরেসের কিংবদন্তি

গালভানের ক্লাব ক্যারিয়ারের অধিকাংশ সময় কেটেছে তালেরেস দে কোর্দোবা ক্লাবে। ক্লাবটির হয়ে ৫০৩টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। পরবর্তীতে বলিভিয়ার ক্লাব বলিভারসহ আর্জেন্টিনার আরও কিছু ক্লাবে খেলেছিলেন এই ফুটবলার। তবে তার মূল পরিচয় রয়ে গেছে তালেরেসের রক্ষাকবচ হিসেবে।

আন্তর্জাতিক ফুটবল ও অবসর

আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের হয়ে লুইস গালভান ৩৪টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন। তিনি ১৯৮২ সালের বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেন এবং সেই টুর্নামেন্টের পর আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসর নেন।

ফুটবলপ্রেমীদের শোক

গালভান দীর্ঘদিন ধরে নানা স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগছিলেন। নিউমোনিয়া ও কিডনি সমস্যার কারণে হাসপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থায়ই তার অবস্থার অবনতি হয়। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (AFA) গভীর শোক প্রকাশ করে এবং বলেন, “লুইস গালভান ছিলেন এক নিঃশব্দ যোদ্ধা, যার মতো নিবেদিতপ্রাণ খেলোয়াড় খুব কমই দেখা যায়।” সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিশ্বজুড়ে ফুটবলপ্রেমীরা তাকে শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করছেন।

গৌরবময় উত্তরাধিকার

লুইস গালভান ছিলেন এমন একজন ফুটবলার, যিনি আলোচনার কেন্দ্রে ছিলেন না, কিন্তু দলের ভিত গড়ে তুলতেন নিরবে। তার সততা, সাহসিকতা ও পেশাদারিত্ব ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অনুকরণীয় উদাহরণ হয়ে থাকবে। তার নাম হয়তো গোলসংখ্যার রেকর্ডে নেই, কিন্তু বিশ্বকাপ হাতে তুলে ধরার মুহূর্তে আর্জেন্টিনার প্রতিটি ফুটবলপ্রেমীর হৃদয়ে ছিল গালভানের অবদান—নির্ভরতার আরেক নাম।

Leave a Reply

scroll to top