হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদন বাতিল

New-Project-39.png

যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক

যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদন বাতিল করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। যার ফলে হুমকির মুখে পড়েছে প্রায় ৬ হাজার ৮০০ বিদেশি শিক্ষার্থী। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোয়েম এই সিদ্ধান্তের কারণ হিসেবে ইহুদি-বিদ্বেষ, হামাস-পন্থী সহানুভূতি এবং বৈষম্যমূলক বৈচিত্র্য নীতি সম্পর্কে উদ্বেগের কথা উল্লেখ করেছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২২ মে) যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা দপ্তরের সচিব ক্রিস্টি নোম এক্স (সাবেক টুইটার)-এ পোস্ট দিয়ে জানান, হার্ভার্ড ‘আইন মানতে ব্যর্থ হওয়ায়’ তাদের স্টুডেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিজিটর প্রোগ্রাম (এসইভিপি) সার্টিফিকেশন বাতিল করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এটা দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য সতর্কবার্তা।’

এর আগে, গত মাসে ‘প্রশাসনের কথা মতো কাজ না করলে’ বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করার অনুমতি বাতিলের হুমকি দিয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন। পাশাপাশি, হার্ভার্ডের জন্য অর্থ বরাদ্দও বাতিল করে সরকার।

প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে এক বিবৃতিতে একে ‘বেআইনি’ বলেছে হার্ভার্ড। বিবৃতিতে তারা বলেছে, ‘আমরা আমাদের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ও গবেষকদের পাশে আছি। তারা ১৪০টিরও বেশি দেশ থেকে এসে হার্ভার্ড ও আমেরিকাকে সমৃদ্ধ করেছে। এই প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ হার্ভার্ড এবং দেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতির হুমকি তৈরি করছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য বলছে, গত শিক্ষাবর্ষে ৬,৭০০ জনেরও বেশি বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি নিয়েছে হার্ভার্ড, যা এর মোট শিক্ষার্থীর ২৭ শতাংশ। এ বছরের শুরু থেকেই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের টানাপড়েন শুরু হয়।

ট্রাম্প প্রশাসনের আকস্মিক নেওয়া এই সিদ্ধান্তে ক্যাম্পাস জুড়ে আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তা ছড়িয়ে পড়েছে।

জানা গেছে, প্রশাসন ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বহু বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে এবং কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বড় প্রতিষ্ঠানকেও চাপে ফেলেছে। তবে হার্ভার্ড প্রথম বড় প্রতিষ্ঠান হিসেবে সরকারের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দেয়। সরকার হার্ভার্ডের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দাবি তুলেছে, যার মধ্যে রয়েছে নিয়োগ, ভর্তি ও শিক্ষাদানের পদ্ধতি বদলানো এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কর-মুক্ত সুবিধা বাতিল করার হুমকি।

ডিএইচএস-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, হার্ভার্ড আগামী ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে এফ ও জে ভিসাধারী শিক্ষার্থীদের ভর্তি করাতে পারবে না। ওইসব শিক্ষার্থীকে আইনি অবস্থান বজায় রাখতে অন্য প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর হতে হবে।

এছাড়া, হার্ভার্ডকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সরকারকে শেষ পাঁচ বছরের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের শাস্তিমূলক রেকর্ডসহ ভিডিও, অডিও প্রমাণ জমা দিতে বলা হয়েছে। এটি না করলে তাদের ছাত্রভর্তি সক্ষমতা ফিরিয়ে আনার কোনো সুযোগ থাকবে না বলেও জানানো হয়।

এদিকে, ট্রাম্প প্রশাসনের দেওয়া নিষেধাজ্ঞায় বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করার সক্ষমতা হারিয়ে বড় আকারে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে হার্ভার্ড। প্রতি বছর বিদেশি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন বাবদ লাখো ডলার উপার্জন করে বিশ্ববিদ্যালয়টি। নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ায় এবার আর সেই সুযোগ থাকছে না হার্ভার্ডের।

Leave a Reply

scroll to top