অস্ট্রেলিয়ার জনপ্রিয় অভিনেত্রী ক্লেয়ার ম্যাকক্যান সম্প্রতি নিজের ইনস্টাগ্রামে জানালেন এক হৃদয়বিদারক খবর—মাত্র ১৩ বছর বয়সে আত্মহত্যা করেছে তার ছেলে, আত্রেউ ম্যাকক্যান। মৃত্যুর পেছনে রয়েছে স্কুলে দীর্ঘ সময় ধরে চলা নির্মম বুলিং। আর এই অপ্রত্যাশিত, মর্মান্তিক ঘটনায় যেন হার না মানেন, সে কারণে অভিনেত্রী শুরু করেছেন এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ—ক্রায়োজেনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে ছেলের মরদেহ সংরক্ষণ করে ভবিষ্যতে তাকে আবার জীবিত করার আশায় চালাচ্ছেন অর্থ সংগ্রহের প্রচার।
“আমার জীবনের আলো নিভে গেছে” — ক্লেয়ার ম্যাকক্যান
রবিবার এক আবেগঘন পোস্টে ক্লেয়ার লেখেন, “আমার সুন্দর ছেলে আত্রেউ ম্যাকক্যানের মৃত্যুর খবর শেয়ার করছি ভাঙা হৃদয় নিয়ে। সে ছিল আমার জীবনের উজ্জ্বল আলো—স্নেহভাজন, সৃজনশীল ও সবাইকে ভালোবাসা দেওয়া এক অবাক করা শিশু।” তিনি আরও বলেন, “এই ক্ষতির ব্যথা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। আমাদের কিছু সময় দিন, যেন আমরা শোককে বুঝে নিতে পারি। সবাইকে ধন্যবাদ যারা আত্রেউকে ভালোবেসেছেন। আমরা পরে আরও তথ্য জানাব। আপাতত তাকে হৃদয়ে রাখুন।”
মৃত্যুর কারণ প্রকাশ
সোমবার ক্লেয়ার জানান, আত্মহত্যার পেছনে রয়েছে তার ছেলের স্কুলে সহপাঠীদের কাছ থেকে মাসের পর মাস ধরে চলা বুলিং বা মানসিক নির্যাতন। এই নির্মম অভিজ্ঞতা সহ্য করতে না পেরে অবশেষে সে চিরদিনের মতো পৃথিবী ছেড়ে যায়।
ছেলেকে ফিরিয়ে আনার এক মায়ের মরিয়া প্রয়াস
ছেলের মরদেহ ভবিষ্যতের কোনো বৈজ্ঞানিক উন্নতির মাধ্যমে আবার জীবিত করা সম্ভব হবে—এই বিশ্বাস থেকেই ক্লেয়ার শুরু করেছেন একটি GoFundMe প্রচারণা। এতে তার লক্ষ্য, ৩ লাখ অস্ট্রেলীয় ডলার (প্রায় ১.৯৬ লাখ মার্কিন ডলার) সংগ্রহ করা, যা ব্যবহার হবে ছেলের মরদেহ ক্রায়োজেনিকভাবে সংরক্ষণের জন্য। এই প্রযুক্তিতে -১৯৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় তরল নাইট্রোজেনে রেখে দেহ সংরক্ষণ করা হয় দীর্ঘ সময়ের জন্য।
বাড়তি অর্থ কোথায় যাবে?
ক্লেয়ার জানান, যদি তহবিলের পরিমাণ লক্ষ্য ছাড়িয়ে যায়, তাহলে সেই অর্থ ব্যয় করা হবে:
- একটি জাতীয় পর্যায়ের অ্যান্টি-বুলিং সচেতনতামূলক শিক্ষা ও সংস্কার ক্যাম্পেইনের জন্য,
- যারা তার ছেলেকে ব্যর্থ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের জন্য,
- এবং অন্যান্য পরিবারকে সহায়তা দিতে, যারা এমন অবহেলার শিকার হয়েছেন।
সাহায্যের আবেদন
তার কথায়, “মৃত্যুর পর সংরক্ষণের জন্য সময় খুবই সীমিত। আমি একজন পাবলিক ফিগার, আর আমার জাতীয় পর্যায়ের প্ল্যাটফর্ম আছে। আমি এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করব, যেন এমনটা আর কোনো শিশুর সঙ্গে না ঘটে। আমার ছেলের জীবন এবং সম্মান ফিরিয়ে আনতে আমাদের সহায়তা করুন। এই ক্যাম্পেইন শেয়ার করুন। তার গল্প ছড়িয়ে দিন। আমাদের পাশে থাকুন। মাত্র ৭ দিন সময় আছে আমাদের হাতে। দয়া করে এখনই এগিয়ে আসুন।”
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, প্রায় ৩,৬৪৫ অস্ট্রেলীয় ডলার সংগ্রহ হয়েছে এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে।