ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচ জয়ের পর দ্বিতীয় ম্যাচে জিতে ৬ বছর পর ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে টি-২০-তে সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ। ২০১৮ সালের পর টি-টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এটিই বাংলাদেরে প্রথম সিরিজ জয়। দেশের বাইরে ২০২২ সালের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতল বাংলাদেশ।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সেন্ট ভিনসেন্টের কিংসটাউনে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে আগে ব্যাট করে ৭ উইকেট হারিয়ে ১২৯ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে ১৮.৩ ওভারে ১০২ রানের বেশি করতে পারেনি ক্যারিবীয়রা। ফলে ২৭ রানের জয়ে সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে বাংলাদেশ।
কিংসটাউনে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র ১২৯ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। জবাবে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশি বোলারদের বোলিং তোপে মাত্র ৪২ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে বসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপরে জুটি গড়ে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন , আকিল হোসেন ও রোস্টন চেইস। তবে ৪৭ রানে এই জুটি ভেঙে গেলে ১৮ ওভার ৩ বলে ১০২ রানে অলআউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আর বাংলাদেশ তুলে নিয়েছে ২৭ রানের জয়। এই জয়ে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিলো বাংলাদেশ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে বুধবার ওপেনিংয়ে নামেন ব্র্যান্ডন কিং ও জনসন চার্লস। প্রথম দুই ওভারেই তারা তুলে নেন ১৯ রান। তবে পরের ওভারেই এই জুটি ভাঙেন তাসকিন আহমেদ। তাসকিনের বলে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান ব্র্যান্ডন কিং। তার বিদায়ে ১৯ রানে প্রথম উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। ব্র্যান্ডন কিং এর পর একই ওভারে আন্দ্রে ফ্লেচারকেও ফেরান তাসকিন। তাসকিনের বলে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে শূন্য রানেই সাজঘরে ফিরে যান আন্দ্রে ফ্লেচার। এই দুই ব্যাটারের দ্রুত বিদায়ে ১৯ রানেই ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
১৯ রানে ২ উইকেট হারানোর পর জুটি গড়েন জনসন চার্লস ও নিকোলাস পুরান। তবে এই জুটিকে বেশিদূর এগোতে দেননি শেখ মেহেদী হাসান। তাসকিনের পর তিনিও জোড়া আঘাত হানেন ক্যারিবীয়ান শিবিরে। তার বোলিং তোপে প্রথমে জনসন চার্লস ও পরে নিকোলাস পুরান পথ ধরেন প্যাভিলিয়নের। জনসন চার্লস ১২ বলে ১৪ ও নিকোলাস পুরান ৮ বলে ৫ রান করে ফিরে যান সাজঘরে। এই দুই ব্যাটারের দ্রুত বিদায়ে ৩২ রনে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
দলের বিপদ আরও বাড়িয়ে সাজঘরে ফিরে যান রভম্যান পাওয়েল। ৭ বলে মাত্র ৬ রান করে হাসান মাহমুদের বলে মেহেদী হাসান মিরাজের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান তিনি। তার বিদায়ে মাত্র ৪১ রানেই ৫ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
হাসান মাহমুদের পর এবার ওয়েস্ট শিবিরে আঘাত হানেন তানজিম হাসান সাকিব। তানজিম হাসান সাকিবের বলে স্লিপে তানজিদ হাসান তামিমের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান রোমারিও শেফার্ড। রোমারিও শেফার্ডের বিদায়ে ৪২ রানে ৬ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা।
এরপরে জুটি গড়ে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন আকিল হোসেন ও রোস্টন চেইস। এই জুটিতে ভর করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে স্বাগতিকরা। তবে বেশিদূর এগোনোর আগেই এই জুটিকে থামিয়ে বাংলাদেশকে স্বস্তি এনে দেন রিশাদ হোসেন। রিশাদ হোসেনের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে যান ৩৪ বলে ৩২ রান করা রোস্টন চেইস। তার বিদায়ে ভাঙে ৪৭ রানের জুটি।
রোস্টন চেইসের বিদায়ের পর একে একে সাজঘরে ফিরে যান গুডাকেশ মোটি, আলজারি জোসেফ ও আকিল হোসেন। যার ফলে ১৮ ওভার ৩ বলেই ১০২ রানেই অলআউট হয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আর বাংলাদেশ তুলে নিয়েছে ২৭ রানের জয়। এই জয়ে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিলো বাংলাদেশ।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে আরও একবার বিপর্যয় দেখেছে বাংলাদেশ। আর্নেস ভ্যালি স্টেডিয়ামে বৃষ্টিবিঘ্নিত দিনে একের পর এক ব্যাটারদের আসা-যাওয়া। ম্যাচের শুরু থেকেই বাংলাদেশের ওপর চেপে বসেছিল উইন্ডিজ বোলিং লাইনআপ। দলীয় রান ৫০ পেরুবার আগেই নেই দলের ৪ উইকেট। আরও একবার লাল-সনুজের ত্রাতা হয়ে আসেন লোয়ার মিডল অর্ডারের শামীম পাটোয়ারী। তার ২ চার ও ২ ছক্কায় ১৭ বলে ৩৫ রানের ইনিংসের সুবাদে লাড়াকু পুজি পায় বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের হয়ে ৩ উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ। এছাড়া রিশাদ হোসেন, তানজীম হাসান সাকিব ও শেখ মেহেদী নেন ২টি করে উইকেট।