ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সর্বশেষ হামলায় ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) যে ‘ফাত্তাহ’ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের দাবি করেছে, তা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
আইআরজিসি জানায়, ‘ফাত্তাহ’ সফলভাবে ইসরায়েলের প্রচলিত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করেছে, যা অনেকে ‘আয়রন ডোম’-এর পতনের সূচনা বলেও অভিহিত করছেন। যদিও ইসরায়েল এখন পর্যন্ত এ দাবির কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
‘ফাত্তাহ’ অর্থ “উদ্বোধক”—ইরানের তৈরি প্রথম হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র, যা ২০২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মোচন করা হয়। উদ্বোধনের সময় আইআরজিসির মহাকাশ শাখার প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির আলী হাজিজাদেহ এটিকে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তির “প্রজন্মগত অগ্রগতি” বলে আখ্যায়িত করেন।
হাজিজাদেহর ভাষ্যমতে, এই ক্ষেপণাস্ত্র পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ভেতর ও বাইরে উভয় স্থানে চলাচলে সক্ষম এবং যেকোনো ধরনের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করতে পারে। তার দাবি—ফাত্তাহকে ধ্বংস করা প্রায় অসম্ভব, কারণ এটি উচ্চ গতি ও জটিল গতিপথে চলাচল করে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ফাত্তাহ কেবল একটি প্রযুক্তিগত উন্নয়ন নয়, বরং ইরানের কৌশলগত শক্তির নতুন রূপ। আঞ্চলিক প্রতিপক্ষ—বিশেষ করে ইসরায়েলের জন্য এটি বড় ধরনের হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে এই অস্ত্রের প্রকৃত কার্যকারিতা নিয়ে এখনো পশ্চিমা বিশ্বে সন্দেহ ও বিশ্লেষণ অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি তাঁর সাম্প্রতিক এক পোস্টে যুদ্ধ শুরুর ঘোষণা দিয়ে বলেন, “আলীর (হায়দার) নামে যুদ্ধ শুরু হলো।”
‘হায়দার’ নামটি ইমাম আলীর একটি উপনাম—যিনি শিয়া মুসলমানদের কাছে ইসলামের প্রথম ইমাম ও নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর বৈধ উত্তরসূরি হিসেবে পরিচিত। খামেনির এমন ঘোষণাকে অনেকেই প্রতীকীভাবে একটি ধর্মীয় যুদ্ধ ঘোষণা হিসেবে দেখছেন।
তিনি আরও বলেন, “সন্ত্রাসী জায়নবাদী শাসনের বিরুদ্ধে আমাদের শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে। আমরা জায়নবাদীদের প্রতি কোনো করুণা দেখাবো না।”
এই বক্তব্য এবং ‘ফাত্তাহ’ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের দাবি এমন সময় সামনে এলো, যখন ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। সামনের দিনগুলোতে দুই দেশের মধ্যে সংঘাত আরও তীব্র হতে পারে বলেই আশঙ্কা বাড়ছে আন্তর্জাতিক মহলে।
