সৌদি আরব থেকে পবিত্র হজ পালন শেষে দেশে ফিরতে শুরু করেছেন বাংলাদেশি হজযাত্রীরা। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ১৬ জুন (সোমবার) রাত পর্যন্ত মোট ২৬ হাজার ১০৯ জন হাজি বাংলাদেশে ফিরে এসেছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ফিরেছেন ৪ হাজার ৯৫ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ২১ হাজার ৫১৪ জন।
ফিরতি যাত্রার জন্য মোট ৬৬টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হয়েছে। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ২২টি, সৌদি পতাকাবাহী সাউদিয়া এয়ারলাইন্সের ২৭টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্সের ১৭টি ফ্লাইট হজযাত্রী পরিবহন করেছে। বিমানের মাধ্যমে দেশে ফিরেছেন ৮,৭১৪ জন, সাউদিয়ায় ১০,৬১৫ জন এবং ফ্লাইনাসে ফিরেছেন ৬,৭৮০ জন।
হজ ব্যবস্থাপনায় সৌদি আরব এবার প্রযুক্তি ও স্বাস্থ্যসেবায় উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। দেশটির বিভিন্ন মেডিকেল সেন্টার থেকে বাংলাদেশি হাজিদের জন্য এখন পর্যন্ত ৫৭,২৫৪টি অটোমেটেড প্রেসক্রিপশন ইস্যু করা হয়েছে। আইটি হেল্পডেস্কগুলো ২২,১১০টি প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়েছে, যা হাজিদের তথ্যসেবা নিশ্চিত করতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে।
এ পর্যন্ত সৌদি আরবের সরকারি হাসপাতালগুলো ২৫৬ জন বাংলাদেশিকে চিকিৎসা সেবা দিয়েছে। বর্তমানে সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও ২৭ জন। তবে হজ কার্যক্রম চলাকালীন সময়ে মোট ৩২ জন বাংলাদেশি মারা গেছেন, যাদের মধ্যে ২৬ জন পুরুষ এবং ৬ জন নারী। মৃত্যুর স্থান অনুযায়ী ২১ জন মক্কায়, ১০ জন মদিনায় এবং ১ জন আরাফায় মৃত্যুবরণ করেছেন।
চলতি বছরের হজ কার্যক্রম শুরু হয়েছিল ২৯ এপ্রিল প্রথম হজ ফ্লাইট দিয়ে, যা শেষ হয় ৩১ মে। দেশে ফেরা শুরু হয়েছে ১০ জুন থেকে এবং এই প্রক্রিয়া চলবে আগামী ১০ জুলাই পর্যন্ত। বাংলাদেশ থেকে এবার মোট ৮৫ হাজার ৩০২ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে গিয়েছিলেন, যার মধ্যে ৫,২০০ জন সরকারি ও ৮০,১০২ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনার আওতায় যান। হজ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে অংশ নিয়েছে ৭০টি অনুমোদিত হজ এজেন্সি।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হাজিদের নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য ও বিমান ব্যবস্থাপনার ওপর নিবিড় নজর রাখা হচ্ছে। সময়মতো ফ্লাইট পরিচালনা, চিকিৎসা সহায়তা ও আইটি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ফিরতি যাত্রা নির্বিঘ্ন রাখতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
সৌদি আরবের প্রযুক্তিনির্ভর হজ ব্যবস্থাপনা এ বছর নতুন মাত্রা পেয়েছে। অটোমেশন ও আইটি হেল্পডেস্কের ব্যবহার হাজিদের সেবা সহজতর করেছে। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকেও যথাসম্ভব সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে। ফেরার এই ধারা সফলভাবে শেষ করতে পারলে এটি ভবিষ্যতের জন্য একটি উন্নত হজ ব্যবস্থাপনার দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।