সম্প্রতি ভারতের মুর্শিদাবাদের তিন পরিযায়ী শ্রমিককে বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করে দেশটির মুম্বাই পুলিশ। জানা গেছে, ভারতের মহারাষ্ট্রে কাজের সন্ধানে গিয়েছিলেন তারা। এরপর তাদের পাকড়াও করে পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনকে না জানিয়েই সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পুশ ইন করা হয়েছিলো।
তারা হলেন- মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলার হোসেন নগরের পূর্বপাড়ার বাসিন্দা মেহেবুব শেখ, হরিহরপাড়ার তরতিপুরের নাজিমুদ্দিন মণ্ডল, বেলডাঙার বেগুনবাড়ি কাজিশাহ এলাকার মিনারুল শেখ।
পরে ঘটনাটি পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক উন্নয়ন পর্ষদের নজরে আসে। রাজ্য প্রশাসনের উদ্যোগে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর তরফে ফ্ল্যাগ মিটিং করে তাদের আবার ভারতে ফিরিয়ে আনা হয়। বিষয়টি নিয়ে বিধানসভায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানালেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ বিষয়ে বিজেপিকে একহাত নিয়ে তিনি বলেন, বাংলা ভাষায় কথা বললে বাংলাদেশি বলা হচ্ছে। বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। লজ্জা করে না আপনাদের! আধার কার্ড, প্যান কার্ড এবং অন্য পরিচয়পত্র থাকার পরেও শুধুমাত্র বাংলা ভাষায় কথা বলার কারণে মহারাষ্ট্রে বিজেপি সরকার এ কাজ করেছে। আমি তাদের ধিক্কার জানাই। পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিরা তো বাংলা ভাষায়ই কথা বলবে।
এর আগে, গত শনিবার উত্তরবঙ্গ সীমান্ত দিয়ে বিএসএফ তাদের বাংলাদেশে পাঠায়। অভিযোগ, তারা বাংলাদেশে যেতে না চাইলে রীতিমতো মারধরও করা হয়। এরপর রাজ্যের হস্তক্ষেপে পুলিশ বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। ঘটনার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।
মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার কুমার সানি রাজ জানিয়েছেন, রোববার (১৫ জুন) বিকেলে কোচবিহার সীমান্ত দিয়ে তাদের দেশে ফেরানো হয়েছে। ঘটনাচক্রে, গত কয়েক মাস ধরেই মহারাষ্ট্র, দিল্লি, আসামসহ বিভিন্ন বিজেপি শাসিত রাজ্যে ভুয়ো নথিতে ভারতে থাকা অবৈধবাসীদের ধরপাকড় শুরু হয়েছে।
তবে, সম্প্রতি আসাম সরকারের ‘পুশ ব্যাক’ নীতি ঘিরে আলোচনা এবং সমালোচনাও হয়েছে যথেষ্ট। এরই মধ্যে রোববার মহারাষ্ট্রের ওই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসে। মমতার অভিযোগ যেসব জায়গায় বিজেপির ‘ডবল ইঞ্জিন’ সরকার রয়েছে, সেখানেই এ ধরনের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।